নিজস্ব প্রতিবেদক: রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ আদায়ে নাজুক অবস্থা। তবে গত বছর এ খাতের রূপালী ব্যাংক প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ আদায় করেছে। ফলে ২০২৩ সাল শেষে ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৭০০ কোটি টাকারও বেশি; যা আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে ৭ গুণেরও বেশি। ২০২২ সালে রূপালী ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা ছিল ১০৬ কোটি টাকা।
জানা যায়, খেলাপি ঋণ আদায়ের পাশাপাশি ব্যাংকটির অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ের পরিস্থিতিও উন্নতি হয়েছে। এছাড়া আমানতের প্রবৃদ্ধি, ঋণ বিতরণ, নতুন হিসাব খোলা, লোকসানি শাখা কমানো,
অটোমেটেড চালানসহ সব ক্ষেত্রেই ভালো করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটি।
তথ্য অনুযায়ী, নগদ আদায়ে ব্যাংকটি গত বছর ৫৫০ কোটি টাকা নগদ আদায়ের কারণে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ২২ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ১৬ শতাংশে। নতুন হিসাব খোলার ক্ষেত্রেও রয়েছে ব্যাংকের আরও বড় সফলতা। ৫১ বছরে সক্রিয় হিসাব ছিল ২২ লাখ। আর শুধু ২০২৩ সালেই খোলা হয়েছে ৮ লাখের বেশি হিসাব। রেকর্ড পরিমাণ নতুন হিসাব খোলায় ইতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে ব্যাংকের স্বল্প সুদের ডিপোজিটের ক্ষেত্রেও। বর্তমানে ৩০ লাখ গ্রাহক রয়েছে রূপালী ব্যাংকের।
উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে উচ্চ সুদের আমানতের পরিমাণ, বেড়েছে স্বল্প সুদ ও সুদবিহীন আমানত। ব্যাংকটির প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফেরায় আমানতে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গত দুই বছরে রূপালী ব্যাংকের আমানত বেড়েছে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে আমানত স্থিতি ৬৮ হাজার কোটি টাকা, যা দুই বছর আগে ছিল ৫৩ হাজার কোটি টাকা।
ব্যাংকটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০২২ সালে বর্তমান এমডি যোগদানের পর থেকে ব্যাংকটি ইউটার্ন নিতে শুরু করেছে। সময়োপযোগী কিছু সিদ্ধান্ত বদলে দিয়েছে রূপালী ব্যাংকের আর্থিক চিত্র। ব্যাংকটি এখন কম সুদের আমানতের দিকে ঝুঁকছে। সিএমএসএমই ঋণ বিতরণ ও খেলাপি ঋণ আদায়ে জোর দেয়াসহ নানা সময়োপযোগী পদক্ষেপে সব সূচকে অগ্রগতি হয়েছে রূপালী ব্যাংকের। এছাড়া বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও গত দুই বছরে বিতরণকৃত কোনো ঋণখেলাপি হয়নি।
সম্প্রতি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ২০২৩ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগের বছরের তুলনায় ব্যাংকের ইপিএস সমন্বিতভাবে দ্বিগুণের বেশি বেড়ে ৬১ পয়সা থেকে ১ টাকা ৩৫ পয়সা হয়েছে এবং এককভাবে তিন গুণের বেশি বেড়ে ৪৫ পয়সা থেকে ১ টাকা ১৭ পয়সা হয়েছে। পাশাপাশি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ঋণাত্মক ২৭ টাকা থেকে বেড়ে ১১০ টাকা ৩২ পয়সা হয়েছে।