এক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা, তিনটিতে সতর্কতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লার ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। গত রোববার কমিশনের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক মো. ওমর ফারুখ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। এছাড়া ভর্তির বিষয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সচেতন করতে জনস্বার্থে ইবাইস ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা-বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি ও দ্য ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লার বিরুদ্ধে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ইউজিসি। গত রোববার সই করা গণবিজ্ঞপ্তিটি গতকাল প্রকাশ করা হয়।

ইউজিসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি কমিশনের প্রতিনিধিদল ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করে। তারা দেখতে পায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকসংখ্যা যেমন অপ্রতুল, তেমনি ‘যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকেরও অভাব’ রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে গবেষণা হয় না। আচার্য-নিযুক্ত বৈধ কর্তৃপক্ষেরও উপস্থিতি সেখানে দেখা যায়নি।

শিক্ষাসহায়ক ক্যাম্পাসের অনুপস্থিতি এবং লাইব্রেরিতে প্রয়োজনীয় পাঠ্যবইয়ের অপ্রতুলতার পাশাপাশি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কারিকুলাম মেয়াদোত্তীর্ণ বলেও জানানো হয় ইউজিসির চিঠিতে। ২০১০ সালের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ১৮ ও ২০ ধারা অনুযায়ী, সিন্ডিকেট ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভর্তি, শিক্ষাদান, সব পরীক্ষা ও এর ফল অনুমোদনের দায়িত্বপ্রাপ্ত।

আইনের ১৭ ও ১৯ ধারা অনুযায়ী, ভাইস-চ্যান্সেলর সিন্ডিকেট ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভাপতি এবং আইনের ৩১ ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি তথা আচার্য সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ দিয়ে থাকেন। আর রাষ্ট্রপতির নিয়োগ দেয়া ভিসির অবর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো আইনগত বৈধতা থাকে না বলে ইউজিসির চিঠিতে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭ সাল থেকে আচার্য নিযুক্ত ভিসি নেই এবং প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার নেই। ফলে রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত উপাচার্যের অবর্তমানে অন্য কারও সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভার আইনগত কোনো বৈধতা নেই। এসব অনিয়মের কারণে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রোগ্রামে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে ইউজিসি।

গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইবাইস ইউনিভার্সিটিতে বর্তমানে অনুমোদিত কোনো ক্যাম্পাস ও ঠিকানা নেই। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ নিয়ে দ্বন্দ্ব ও আদালতে একাধিক মামলা বিদ্যমান। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চ্যান্সেলর তথা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগ করা ভিসি, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার পদে কোনো ব্যক্তি নেই। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে কোনো পদেই আইনানুযায়ী বৈধভাবে কেউ নিয়োজিত নেই। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে বৈধ কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়টির সব কারিকুলাম মেয়াদোত্তীর্ণ বলে সব অ্যাকাডেমিক প্রোগ্রামের বৈধতা হারিয়েছে। ২০১০ সালের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ১৭ এবং ১৯ ধারা অনুযায়ী, বৈধ সিন্ডিকেট এবং অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টির অ্যাকাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক কার্যক্রম, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ও এর ফলাফল এবং অ্যাকাডেমিক সনদের আইনগত কোনো বৈধতা নেই।

আমেরিকা-বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির দেয়া ঠিকানায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী, ফ্লোর স্পেস, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার মতো কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান নেই। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চ্যান্সেলর তথা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগ করা ভিসি, প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার পদে কোনো ব্যক্তি নেই। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে কোনো পদেই আইনানুযায়ী বৈধভাবে কেউ নিয়োজিত নেই। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে বৈধ কোনো কর্তৃপক্ষ নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়টির সব কারিকুলাম মেয়াদোত্তীর্ণ বলে সব অ্যাকাডেমিক প্রোগ্রাম বৈধতা হারিয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ১৭ ও ১৯ অনুযায়ী, বৈধ সিন্ডিকেট এবং অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টির অ্যাকাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি, পরীক্ষা ও এর ফলাফল এবং অ্যাকাডেমিক সনদের আইনগত কোনো বৈধতা নেই।

ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। উল্লিখিত ভবনে অবস্থানরত ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভবনের পঞ্চম তলায় দ্য ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা’র কার্যক্রম পরিচালিত হতো। দুই মাস আগে ভবনের কর্তৃপক্ষ (বাংলাদেশ পুলিশ কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড) দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা’র লোকজন এবং মালামাল বের করে দিয়ে পঞ্চম তলায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে এবং সব ধরনের ইউটিলিটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। সেই মোতাবেক পঞ্চম তলায় গিয়ে দেখা যায়, ফ্লোরের প্রবেশকক্ষে তালা ঝোলানো রয়েছে এবং সেখানে লেখা রয়েছেÑবাংলাদেশ পুলিশ কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড, পলওয়েল কারনেশন শপিং সেন্টার।

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০