এক রেটে ডলার কিনতে চায় ব্যাংক, সিদ্ধান্ত রোববার

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে ডলার মার্কেটে চলছে অস্থিরতা। এ অস্থিরতার মধ্যে ব্যাংকগুলো বেশি দামে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স আনতে প্রতিযোগিতা শুরু করেছে। ফলে যে ব্যাংক বেশি দাম দিতে পারে, তারাই রেমিট্যান্স পা?চ্ছে। এ সমস্যা সমাধানে রেমিট্যান্স কেনার ক্ষেত্রে এক রেট বা দাম নির্ধারণের সুপারিশ করেছে ব্যাংকগুলো।

প্রাথমিক বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত না হলেও আগামী রোববার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে সুপারিশ করে ব্যাংকগুলো। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বৈঠক শেষে বাফেদার চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম বলেন, আমরা মার্কেট পর্যালোচনা করছি। এক সপ্তাহের মধ্যে ডলার মার্কেট নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারব। দেশে ডলারের দাম যাতে আর না বাড়ে, সে ধরনের উদ্যোগও নিতে যাচ্ছি। বাজারটাকে স্থিতিশীল করার জন্য যে ধরনের উদ্যোগ নেয়া দরকার তা নেয়া হবে। শিগগির ডলার সংকট কেটে যাবে।

সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, বর্তমানে ডলার মার্কেট কোন অবস্থানে আছে, সেটা বোঝার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আমাদের আরও দু-তিন দিন এ নিয়ে আলোচনা হবে। এরপর আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারব। আশা করছি আগামী সপ্তাহে ডলার নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত আসবে।

বৈঠক শেষে এবিবির চেয়ারম্যান সেলিম আরএফ হোসেন বলেন, ডলার মার্কেট নিয়ে আগামীতে কী ধরনের নীতিমালা করা যেতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। শনি বা রোববারের মধ্যে একটা সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স অনেকটাই পজিটিভ। পার্থক্যটা অনেকাংশে কমে এসেছে। ভবিষ্যতে এ ঘাটতি আরও কমে আসবে। ডলার সংকট বেশি দিন থাকবে না বলে আশা করছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ডলার কেনাবেচায় অতি মুনাফা করায় এখন পর্যন্ত দেশি-বিদেশি মোট ১৩টি ব্যাংকের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রথমে বিদেশি খাতের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকসহ দেশি প্রাইম, ব্র্যাক, দি সিটি, ডাচ্-বাংলা ও সাউথইস্ট ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব ব্যাংকের এমডিদেরও তখন নোটিশ দেয়া হয়। পরে ইস্টার্ন ব্যাংকের কাছেও ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। এরপর গত বুধবার আরও ছয় ব্যাংকের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলো হলো বিদেশি এইচএসবিসি এবং দেশি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), এনসিসি ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়া।

জানা গেছে, প্রতিটি ব্যাংককে পাঠানো চিঠিতে অতি মুনাফার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি কোনো কোনো ব্যাংককে ঘোষিত দামের সঙ্গে প্রকৃত দামের মিল না থাকা, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনলাইন পোর্টালে নিয়মিত দাম ঘোষণা না করা, ঘোষিত দামে রপ্তানি ও আমদানিতে ডলারের মূল্য নির্ধারণ না করায় ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

কয়েক মাস ধরে ডলারের বাজারে অস্থিরতা চলছে। ডলারের দাম স্থিতিশীল রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। এরই মধ্যে প্রতি ডলারের দাম ৮৬ থেকে বাড়িয়ে ৯৫ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে আমদানির ক্ষেত্রে ডলারের দাম ১০৫ থেকে ১০৬ টাকায় উঠেছে। ফলে আমদানি খরচ বেড়ে গেছে, যা প্রকারান্তরে ভোক্তাদের ওপর গিয়ে পড়বে। কারণ আমদানি খরচ বাড়লে পণ্যের দাম বাড়ে। তখন ভোক্তাদের বেশি দামে পণ্য কিনতে হয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০