নিজস্ব প্রতিবেদক: আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আগের চেয়ে কিছুটা কম দামে এক লাখ টন সার কেনার তিনটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে সরকার। গতকাল বুধবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ইউরিয়া সার কিনতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দুটি এবং ডিএপি সার কিনতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বৈঠক শেষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সিদ্ধান্তগুলো তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) প্রস্তাব অনুযায়ী সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশনের কাছ থেকে ২০৪ কোটি ৭২ লাখ ৮২ হাজার ৫৪৫ টাকায় ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এ কেনাকাটায় প্রতি টন ইউরিয়া সারের দাম পড়ছে ৬৩২ ডলার, আগেরবার যার দর ছিল ৬৭৮ ডলার। অর্থাৎ এবার প্রায় ৪৬ ডলার কমে ইউরিয়া সার কেনার প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে।
বিসিআইসির আরেক প্রস্তাবে কাতারের মুনতাজাতের কাছ থেকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় ২০৪ কোটি ৭২ লাখ ৮২ হাজার ৫৪৫ টাকায় ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে জানান সাঈদ মাহবুব খান। এখানেও প্রতি টন সারে ৪৬ ডলার সাশ্রয় হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কাতার থেকে কেনা সারের দামও প্রতি টন ৬৩২ দশমিক ১৭ ডলারের মধ্যে রয়েছে।’
বৈঠকে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) প্রস্তাবে রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় সৌদি আরবের মায়দেনের কাছ থেকে ৩০৯ কোটি ৭৭ লাখ ৯৬ হাজার টাকায় ৪০ হাজার টন ডিএপি সার কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত সচিব জানান, প্রতি টন ডিএপির দাম পড়েছে ৭২৬ দশমিক ৫০ ডলার, যা আগে কেনা হয়েছিল ৮৬৬ ডলারে। সেই হিসাবে ১৪০ ডলার কমে এবারের প্রস্তাব এসেছে।
হিসাব করে দেখা যাচ্ছে, ইউরিয়া সার কেনার দুটি প্রস্তাবেই প্রতি কেজি সারের দাম পড়ছে ৬৮ টাকা ২৪ পয়সা। গত জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে প্রতি কেজি ইউরিয়া সার ৫৫ টাকা ৭৯ পয়সায় কিনতে পেরেছিল সরকার। কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, প্রতি বছর ২৬ লাখ টন ইউরিয়া সারের প্রয়োজন হয়, ডিএপি সার লাগে প্রায় ১৬ লাখ টন।
সরকার ডিলার পর্যায়ে ২০ টাকা ও খুচরা পর্যায়ে ২২ টাকা দামে ইউরিয়া সার বিক্রি করে। আর প্রতি কেজি ডিএপি সারের দাম ১৬ টাকা নির্ধারিত আছে। সারের বাড়তি দামের খরচ মেটাতে গত বছর প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়েছিল সরকারকে।