এক লাখ টাকা ঋণের সুদ মওকুফ

নিজস্ব প্রতিবেদক: এপ্রিল ও মে মাসের স্থগিত হওয়া গ্রাহকের ব্যাংক সুদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এক লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের এপ্রিল ও মে মাসের সুদ সম্পূর্ণ মওকুফ করা হয়েছে। অন্যান্য গ্রাহকদের সুদের পরিমাণ আনুপাতিক হারে মওকুফ করেছে। গ্রহকের মওকুফ হওয়া সুদের অর্থ ব্যাংকগুলোকে পরিশোধ করবে রাষ্ট্র।

(১০ জুন) এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অবশ্য সুদ মওকুফের বাহিরে রাখা হয়েছে বিদেশি উৎস, এডি শাখা থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় নেয়া ঋণ  ও ক্রেডিট কার্ডের সুদ পুরোটাই দিতে হবে।

প্রসঙ্গ, করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) কারণে অর্থনীতি এখন টালমাটাল। সৃষ্ট ব্যবসায়িক মন্দা পরিস্থিতিতে গত এপ্রিল ও মে এই দুই মাসের সুদ আদায় স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই সুদ ব্যাংকের ব্লক হিসাবে নেয়া হয়েছে। এসব ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ৯ শতাংশ হিসাবেই ধরা হবে। যেসব ব্যাংক এখনো সুদ-হার ৯ শতাংশ করেনি, ওইসব ব্যাংক এই সুদ নিতে পারবে না।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, এক লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের বিপরীতে বার্ষিক ২ শতাংশ হারে এবং ১০ লাখ টাকার বেশি ঋণে ১ শতাংশ হারে সুদ মওকুফ পাওয়া যাবে। অর্থাৎ এক লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের সুদ (ঋণের সর্বোচ্চ সুদ ৯ শতাংশ ধরে) ২ শতাংশ মওকুফ করা হয়েছে। বাকি ৭ শতাংশ গ্রাহককে পরিশোধ করতে হবে।

১০ লাখ টাকার ওপরে ঋণের সুদ ১ শতাংশ মওকুফ করা হয়েছে। বাকি ৮ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে গ্রাহককে। ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে সুদ আদায়ের সময় নির্ধারণ হবে। তবে একজন গ্রাহক ঋণের সুদ ১২ লাখ টাকার বেশি মওকুফ পাবেন না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্লক হিসাবে স্থানান্তরিত মওকুফ অবশিষ্ট সুদ ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে মাসিক কিস্তিতে গ্রাহকের নগদ প্রবাহ বিবেচনায় ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে আদায় করতে পারবে ব্যাংকগুলো। তবে যেসব ঋণ হিসাবে মাসিক কিস্তি নির্ধারিত রয়েছে বা মেয়াদপূর্তির তারিখ ২০২১ সালের জুন বা এর আগে নির্ধারিত রয়েছে সেসব ক্ষেত্রে উক্ত ঋণ ব্যাংকার গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে আদায় করা যাবে।

সকল প্রকার নিয়মিত ঋণের ওপর এপ্রিল-মে মাসের আরোপিত সুদ আয় খাতে স্থানান্তর করা যাবে। চলমান ঋণ হিসাবের ক্ষেত্রে মওকুফ অবশিষ্ট আদায়যোগ্য সুদ অনুমোদিত সীমাতিরিক্ত লিমিট হিসেবে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে নবায়নের সময় সুদ সমন্বয় করা যাবে।

গত এপ্রিল ও মে মাসের মওকুফ অবশিষ্ট সুদ আদায়ের নিমিত্তে সুদবিহীন ব্লক হিসাবে সংরক্ষণ করার পরিবর্তে ইন্টারেস্ট রিসিভাবল অ্যাকাউন্ট বা বিদ্যমান অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্যাংকের নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী আলাদা হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে।

এক্ষেত্রে উক্ত সুদের ওপর ২০২১ সালের ৩০ জুন তারিখ পর্যন্ত সময়ে কোনোভাবেই পুনরায় সুদ আরোপ করা যাবে না। কোনো ঋণের বিপরীতে মওকুফযোগ্য সুদ আদায় করা হয়ে থাকলে তা সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতাকে ফেরত প্রদান করতে হবে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট ব্যাংক তাদের প্রাপ্য সুদ ভর্তুকির পরিমাণ বাংলাদেশ ব্যাংককে নিশ্চিত হওয়ার পর গ্রাহক পর্যায়ে সুদ মওকুফ কার্যকর করতে পারবে।

প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য দুই হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়ার ঘোষণা দেয় সরকার। সুদের অবশিষ্ট অর্থ ব্যবসায়ীরা যাতে ১২ মাসের কিস্তিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে পরিশোধ করতে পারেন, সেই উদ্যোগও নেয় সরকার।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০