ক্রীড়া প্রতিবেদক: শেষ হয়েছে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চট্টগ্রাম পর্ব! সাগরিকায় রান উৎসবের মঞ্চ পেরিয়ে আবার ঢাকায় ফিরেছে দেশের সবচেয়ে জমজমাট এ আসর। আজ দিনের প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে আতিথ্য দেবে ঢাকা প্লাটুন। আরেক ম্যাচে রংপুর রেঞ্জার্স মুখোমুখি হবে খুলনা টাইগার্সের।
এবারের আসরে এর আগে ইমরুল কায়েসদের বিপক্ষে সাগরিকায় ৪৪৬ রানের ম্যাচে ২০৫ রান তুলেও ১৬ রানে হেরেছিল মাশরাফি মুর্তজার দল। অন্যদিকে মুশফিকুর রহিমের দলের বিপক্ষে ৮ উইকেটের ব্যবধানে হেরেছিল মোহাম্মদ নবীর রংপুর। লিগে প্রথম ম্যাচে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে জয় তুলে নিতে চায় ঢাকা ও রংপুর। প্রতিশোধ মন্ত্রই তাই এগিয়ে যাওয়ার সোপান দু’দলের জন্য।
নিজেদের শেষ ম্যাচে সিলেট থান্ডারকে ৮ উইকেটের উড়িয়ে দিয়ে ফুরফুরে মেজাজে মাশরাফির ঢাকা। চট্টগ্রাম অবশ্য নিজেদের শেষ ম্যাচে ৬ উইকেটে হেরেছিল রংপুরের বিপক্ষে। নিজেদের শেষ ম্যাচটা হতাশায় কাটিয়েছে খুলনাও। রাজশাহী রয়্যালসের বিপক্ষে মুশফিকের দল হেরেছিল ৭ উইকেটের ব্যবধানে। অন্যদিকে অধিনায়ক বদল করে পাঁচ ম্যাচ খেলে প্রথম সাফল্য দেখেছিল রংপুর। নিয়মিত অধিনায়ক মোহামদ নবীর বদলে সেদিন দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন টম অ্যাবেল। তাতেই শক্তিশালী চট্টগ্রামকে ৬ উইকেটে হারায় তারা।
ঢাকা প্লাটুনের দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল, ব্যাটে-বলে গত দুই ম্যাচে উজ্জ্বল মেহেদী হাসান, পাকিস্তানি অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি, লঙ্কান বাঁহতি ব্যাটসম্যান ও ডানহাতি বোলার থিসারা পেরেরার ওপর নজর থাকবে। এছাড়া বল হাতে পাকিস্তানি পেসার ওয়াহাব রিয়াজ ও লেগস্পিনার শাদাব খান হয়ে উঠতে পারেন প্রতিপক্ষের জন্য আতঙ্ক। অন্যদিকে এখন পর্যন্ত আসরের সবচেয়ে ধারাবাহিক দল চট্টগ্রাম। তাদের অস্ত্র ভাণ্ডারে আছে উইন্ডিজের ওপেনার লেন্ডেল সিমন্স, শ্রীলঙ্কার মারকুটে ব্যাটসম্যান আভিস্কা ফার্নান্দো ও সেরা পাঁচ রান সংগ্রাহকের তালিকায় একমাত্র বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস। এছাড়া এবারের আসরে ২৪০ রান সংগ্রহ করা চাদউইক ওয়ালটনও আছেন এ দলে। যিনি এবারের আসরে সর্বাধিক (১৫) ছক্কারও মালিক। বোলিংয়ে দলের নেতৃত্ব দেবেন মেহেদী হাসান রানা। তার ঝুলিতে আছে ১৩টি উইকেট। এছাড়া জাতীয় দলের পেসার রুবেল হোসেনও আছেন এ দলে। এছাড়া বিশ্বকাপজয়ী তারকা লিয়াম প্লাঙ্কেটের যোগদান আরও মজবুত করেছে চট্টগ্রাম শিবিরকে। দুই দলে সব তারকাদের সমাবেশে তাই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দেখছেন সমর্থকেরা।
খুলনা দলের ব্যাটিং অর্ডারের মূল শক্তি বাংলাদেশ জাতীয় দলের ব্যাটিং ভরসা মুশফিকুর রহিম ও দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যান রাইলি রুশো। এছাড়া বোলিংয়ে শহীদুল ইসলাম ও রবি ফ্রাইলিঙ্ক দলের আস্থার প্রতীক। উল্টোদিকে রংপুর শিবিরে মোহাম্মদ নাঈমও লুইস গ্রেগরির ব্যাট সাহস জোগাচ্ছে তাদের। এছাড়া মোহাম্মদ নবী, মুস্তাফিজুর রহমান ও ফজলে মাহমুদে জয়ের স্বপ্ন দলটির।
চট্টগ্রাম পর্ব শেষে পয়েন্ট টেবিলে ৭ ম্যাচে ৫ জয় ও ২ হার নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে চট্টগ্রাম। তাদের পয়েন্ট ১০। রাজশাহী ও ঢাকা সমান ৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে দুই ও তিন নম্বর অবস্থানে। এরপর ৬ পয়েন্ট নিয়ে খুলনা আছে চারে। ৪ পয়েন্ট নিয়ে তারপরই আছে কুমিল্লা। ৬ ম্যাচে এক জয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে সিলেট থান্ডার আছে ছয়ে। আর সবার নিচে রংপুর। তারা ৫ ম্যাচে জয় পেয়েছে মাত্র ১ ম্যাচে। তাদের পয়েন্টও ২।
গ্রুপপর্বের মোট ৪২ ম্যাচের মধ্যে মাত্র শেষ হয়েছে ২০টি ম্যাচ। তাই আশা ছাড়াছে না কোনো দলই। সব দলের লক্ষ্য একটা শিরোপাকে কেন্দ্র করেই। এখন পর্যন্ত সেই সম্ভাবনা আছে সবারই। তলানির দলগুলো একটু মাথাচাড়া দিয়ে উঠলেই হয়তো এবারের আসরটি হয়ে উঠবে আরও জমজমাট। ঢাকা পর্বকেই টার্গেট করলেন তারকা ক্রিকেটাররা।
মন্তব্য