Print Date & Time : 23 June 2025 Monday 9:46 pm

এগিয়ে প্রকৌশলের লেনদেন পিছিয়েছে ব্যাংক খাত

নিজস্ব প্রতিবেদক: মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ব্যাংক খাতের লেনদেন বেশ পিছিয়ে পড়েছে। তবে এগিয়ে যাচ্ছে প্রকৌশল খাতের লেনদেন। এর মধ্য দিয়ে জুন ক্লোজিং কোম্পানিতে বিনিয়োগ বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তথ্যমতে, গত সপ্তাহে মোট লেনদেনের ৩৪ শতাংশ ছিল ব্যাংক খাতের দখলে। আলোচিত সময়ে ব্যাংক খাতের দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ১৯৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে মোট লেনদেনের ৫২ শতাংশ ছিল ব্যাংক খাতের দখলে। ওই সময় ব্যাংক খাতের দৈনিক লেনদেন হয়েছিল ৪৬৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ব্যাংক খাতের লেনদেন কমেছে ১৮ শতাংশ। এদিকে গেল সপ্তাহে মোট লেনদেনের ১৩ শতাংশ ছিল প্রকৌশল খাতের দখলে। আলোচিত সময়ে প্রকৌশল খাতের দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৭৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ শেষে মোট লেনদেনে এ খাতের অংশগ্রহণ ছিল মাত্র ছয় শতাংশ। ওই সময় প্রকৌশল খাতের দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৫১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অতীতে প্রতিটি খাতের হিসাববছর শেষ হওয়ার আগে ওই খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানির দর বাড়তে দেখা গেছে। কিন্তু এবার তার ব্যত্যয় ঘটেছে, ব্যাংক ও নন-ব্যাংকিং আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর ডিসেম্বরে হিসাববছর শেষ হলেও এবার তাদের দর জানুয়ারি থেকে বাড়তে শুরু করেছে। এতে জুন ক্লোজিংয়ের দরে নেতিবাচকব প্রভাব পড়ে। এতে ব্যাংক খাতের শেয়ারের লেনদেনে বেড়ে রেকর্ড গড়ে। কিন্তু চলতি প্রথম সপ্তাহ থেকে ফের ব্যাংক খাতের লেনদেনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিপরীত দিকে জুন ক্লোজিং কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগ বাড়তে শুরু করেছে। এতে এসব খাতের লেনদেনেও ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

তারা আরও বলছেন, এবার প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা অধিকাংশই ব্যাংক খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছিল। তাদের পাশাপাশি সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও বিনিয়োগে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এ কারণে ব্যাংক খাতে লেনদেনে রেকর্ড তৈরি হয়েছে। তবে ধীরে ধীরে জুন ক্লোজিং কোম্পানিতে বিনিয়োগ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন তারা।

এ সম্পর্কে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, অতীতের চেয়ে এবার ব্যাংক খাতের শেয়ারে বিনিয়োগ ও লেনদেন নতুন রেকর্ড, যা অন্যান্য সময়ের চেয়ে ব্যতিক্রম। কারণ সাধারণত ডিসেম্বরের আগে ব্যাংকের শেয়ারে লেনদেন বাড়ে। এবার যা হয়েছে অতীতে এমনটা দেখা যায়নি। তবে জুন ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর ডিক্লারেশন (লভ্যাংশ) ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে।

এদিকে পিই রেশিও অনুযায়ী ব্যাংক খাতে এখনও বিনিয়োগ পরিবেশ বিরাজ করছে। তারপরেও জুন ক্লোজিং দু-একটি খাতে বিনিয়োগ পরিবেশ বিরাজ করছে। ব্যাংক খাতের পিই রেশিও ১০ দশমিক ৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এছাড়া জ্বালানি খাতের পিই রেশিও ১২ দশমিক ৮ পয়েন্টে এবং বিমা খাতের পিই রেশিও ১৩ দশমিক ৮ পয়েন্টে, প্রকৌশল খাতের পিই রেশিও ২২ দশমিক শূন্য পয়েন্টে অবস্থান করছে। তাছাড়া টেলিকমিউনিকেশন খাতের পিই রেশিও ১৮ দশমিক ২ পয়েন্টে, চামড়া খাতের পিই রেশিও ১৯ দশমিক ৩ পয়েন্টে, ওষুধ ও রসায়ন খাতের পিই রেশিও ২০ দশমিক এক পয়েন্টে অবস্থান করছে। পিই রেশিও ১৫-এর ঘরে থাকলে বিনিয়োগ নিরাপদ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারে ব্যাংক খাতের ৩০টি এবং প্রকৌশল খাতের ৩৪টি প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত রয়েছে।