এডিপি বাস্তবায়নে মনোযোগ বাড়ান

 

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মোট বরাদ্দের মাত্র ৩১ দশমিক ১৭ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে। গত পাঁচ বছরের মধ্যে এটি সর্বনিম্ন বাস্তবায়ন হার। এমনকি কভিডকালেও এডিপি বাস্তবায়নের হার এর চেয়ে ভালো ছিল। সরকারের কৃচ্ছ্রসাধন নীতির কারণে এডিপি বাস্তবায়ন কম হয়েছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) বুধবার এডিপি বাস্তবায়নের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করে। তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাস পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছে ৮৫ হাজার ৬০২ কোটি টাকার। এর আগের অর্থবছর প্রথম আট মাসে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৩২ দশমিক ১০ শতাংশ।

অর্থবছরের আট মাসে ৩১ দশমিক ১৭ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে। এর অর্থ হলো এডিপি পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে চাইলে বাকি চার মাসে বাকি ৬৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ কাজ করতে হবে। যে পদ্ধতিতে ও গতিতে কাজ চলছে, তাতে প্রতীয়মান হয় এডিপি ঘোষণা করা হয় কেবলই আনুষ্ঠানিকতার জন্য, কাজে পরিণত করার জন্য নয়। অর্থবছরের শুরুতে সাধারণত প্রকল্পের কাজ তেমন এগোয় না বা মন্ত্রণালয়গুলো প্রকল্পের কাজ শুরু করতেই পারে না। এটি জানা কথা। তা যদি কেবলই আনুষ্ঠানিকতা হয়, তাহলে কাক্সিক্ষত উন্নয়ন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। বছরের পর বছর ধরে বছরের শুরুর দিকে কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ প্রকল্প বাস্তবায়নে একদমই পারদর্শিতা দেখাতে পারে না এবং ওই মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে জবাবদিহিও করতে হয় না। প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দের টাকা খরচে যেন মনোযোগ নেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। বরাদ্দ হওয়া অর্থ খরচ করতে না পারার পেছনে প্রকল্প কর্মকর্তাদের অদক্ষতা ও সুষ্ঠু ক্রয় পরিকল্পনার না থাকাই বড় কারণ। অর্থবছর শুরু হওয়ার আগেই ক্রয় পরিকল্পনা থাকা উচিত, যাতে বাজেট পাস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠিকাদারকে কাজ দেয়া সম্ভব হয়। এতে প্রকল্প যথাসময়ে শেষ হবে, অর্থনৈতিক সুবিধা বেশি পাওয়া যাবে। কিন্তু আমাদের  কর্মকর্তাদের এমন দায়িত্ববোধ বলেই এডিপি বাস্তবায়নে ধীরগতি! সেই ২০১৮ অর্থবছর থেকে বছরের শুরুতেই মন্ত্রণালয়গুলোকে বরাদ্দের সব টাকা খরচের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তাছাড়া টাকা খরচের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কোনো ছাড়পত্র নিতে হয় না। তবু এডিপি বাস্তবায়ন আগের সেই তিমিরেই রয়ে গেছে। অথচ প্রকল্প বাস্তবায়নে ছোট-বড় সব মন্ত্রণালয়েরই উদ্যোগী থাকা উচিত। কেননা, এডিপির অর্থ খরচ হলে তা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখে। শম্ভুকগতি দূরীকরণে এগিয়ে আসতে হবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়কেই। কর্মসূচি, প্রকল্প বাস্তবায়নে তদারকি বাড়াতে হবে। প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার বেশ কিছু অনুশাসন দিয়েছেন। যেমন প্রকল্প কর্মকর্তাদের প্রকল্প এলাকায় অবস্থান করা, জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রকল্প নেয়া।  প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন বাস্তবায়ন ও নজরদারিতে তথা এডিপি বাস্তবায়নে  সর্বত্মক উদ্যোগ নেয়া হবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০