বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: বাংলাদেশ সরকারের হিসাব অনুযায়ী দেশে সাক্ষরতার হার ৬১ শতাংশের বেশি। এক্ষেত্রে অক্ষরজ্ঞান থাকলেই সাক্ষর ধরা হয়। তবে গণসাক্ষরতা অভিযানের গবেষণায় উঠে এসেছে দেশের সাক্ষরতার হার ৫১ শতাংশ। তাই সাক্ষরতার হার সঠিকভাবে নির্ধারণে এর সংজ্ঞা পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে সংস্থাটি। গতকাল এডুকেশন ওয়াচের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ দাবি জানানো হয়েছে।
এডুকেশন ওয়াচ গবেষণার এ ১৫তম প্রতিবেদনে চতুর্থ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে অন্তর্ভুক্ত সাক্ষরতা, দক্ষতা উন্নয়ন ও জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ এ তিনটি বিষয় নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর এলজিইডি অডিটোরিয়ামে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এ সময় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ক্যাম্পেইন ফর পপুলার এডুকেশনের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী। প্রতিবেদনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ তুলে ধরেন গবেষণা প্রকল্পের প্রধান সমীর রঞ্জন নাথ ও সহকারী প্রধান ড. মানজুর আহমেদ। অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এডুকেশন ওয়াচ তাদের এ গবেষণা প্রকল্পে দেশের ১১ ও তদূর্ধ্ব বছর বয়সী সব জনগোষ্ঠীকে চারটি ভিন্ন প্রশ্নপত্রের মুখোমুখি করে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে। সর্বমোট ২৭০টি গ্রাম/মহল্লা থেকে ১১ হাজার ২৮০ জনের ওপর এ জরিপ পরিচালিত হয়। প্রচলিত ধারার সাক্ষর এবং বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে সাক্ষর এক নয় দাবি করে এডুকেশন ওয়াচ চারটি স্তরে তাদের গবেষণায় সাক্ষরতার পরিমাপ করেছে। সমানসংখ্যক নারী ও পুরুষের সমন্বয়ে ১০০ জন প্রশিক্ষিত গবেষণা সহকারী ২০১৬ সালের মে থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত এ গবেষণার তথ্য সংগ্রহ করেন।
গবেষকদের প্রণিত প্রশ্নে যারা ২৫ শতাংশের কম নম্বর পেয়েছে তাদেরকে অ-সাক্ষর এবং যারা ২৫ থেকে ৪৯ শতাংশের মধ্যে নম্বর পেয়েছে তাদেরকে প্রাক-সাক্ষর হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এছাড়া যারা ৫০ থেকে ৭৪ শতাংশ নম্বর পেয়েছে তাদেরকে প্রারম্ভিক স্তরের সাক্ষর এবং যারা ৭৫ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছে তাদেরকে উচ্চতর স্তরের সাক্ষর হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
প্রতিবেদনের মূল বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে, ধীরগতিতে হলেও সাক্ষরতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বেশ অগ্রগতি অর্জন করেছে। সাক্ষরতার লক্ষ্য অর্জনে ‘সবার জন্য শিক্ষা’ আন্দোলন ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষাই সাক্ষরতা অর্জনের প্রধান উৎস; কিন্তু বিদ্যালয়ের শিক্ষার নি¤œমান আবার সাক্ষরতার অগ্রগতিকে ব্যাহত করছে। আনুষ্ঠানিক বৃত্তিমূলক শিক্ষাধারা আমাদের দেশে জনপ্রিয় নয়, এ সম্পর্কে নানান ভ্রান্ত ধারণাও প্রচলিত আছে। বিভিন্ন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ও ডিজিটাল পঠন সামগ্রীর প্রাপ্যতা এবং তার ব্যবহার নতুন আশার আলো সঞ্চার করেছে।