শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাজ্যের পর এবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে পোল্যান্ড। সম্প্রতি দেশটির সাংবিধানিক আদালত এক রায়ে বলেছেন ইইউর মূল চুক্তির কিছু ধারার সঙ্গে পোলিশ আইনের কোনো সামঞ্জস্য নেই। এরপরই ইইউভুক্ত ২৭টি দেশের সঙ্গে থাকা না থাকা নিয়ে পোলিশ নাগরিকদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দেয়। যদিও স্থানীয় সময় গত রোববার ইউর সঙ্গে থাকার সমর্থনে দেশটির হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। তবে দেশটির সরকার ইইউ ছাড়ার পক্ষে। খবর: বিবিসি, রয়টার্স।
ইইউর সদস্য থাকতে হলে মৌলিক কিছু নীতি সদস্যদের মানতেই হয়। এর মধ্যে অন্যতম হলোÑকিছু কিছু বিষয়ে ইইউ আইনের বিধান এবং ইউরোপীয় আদালতের রায়ই হবে চূড়ান্ত। সদস্য দেশগুলোর সরকার ও আদালতকে তা মেনে নিতে হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের এ মৌলিক নীতির প্রশ্নে জোটটির সঙ্গে পোল্যান্ডের বিরোধ চরমে পৌঁছেছে। দেশটির সাংবিধানিক আদালত বৃহস্পতিবার এক রায়ে বলেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মূল চুক্তির কিছু ধারার সঙ্গে পোলিশ আইনের কোনো সামঞ্জস্য নেই। এ রায়ের মাধ্যমে পোল্যান্ডের সর্বোচ্চ আদালত পক্ষান্তরে ইউরোপীয় আইন এবং ইউরোপীয় আদালতের শ্রেষ্ঠত্বের বিধান প্রত্যাখ্যান করল।
মানবাধিকার বা সমকামী অধিকারের মতো কিছু ইস্যুতে পোল্যান্ডের সরকারের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরেই ব্রাসেলসের টানাপড়েন চলছিল। সেই বিরোধে এখন নতুন মাত্রা যোগ হলো।
এর ফলে উদ্বেগ বাড়ছে যে যুক্তরাজ্যের মতো পোল্যান্ডও কি ইউরোপীয় জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পথ ধরছে? ইতোমধ্যেই দেশটিতে ব্রেক্সিটের মতো ‘পোলেক্সিট’ শব্দটি উচ্চারিত হতে শুরু করেছে।
পোলিশ সাংবিধানিক আদালতের রায়ের পর ফ্রান্স বলছে, ইইউ জোট থেকে পোল্যান্ডের প্রস্থান এখন ‘সত্যিকারের একটি ঝুঁকি।’ শুক্রবার ফরাসি এবং জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক যৌথ বিবৃতিতে পোলিশ সরকারের সমালোচনা করেন। তারা বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদের প্রধান একটি শর্ত হচ্ছে, ‘অভিন্ন কিছু মূল্যবোধ ও রীতিনীতিকে শর্তহীনভাবে এবং অক্ষরে অক্ষরে মানতে হবে। এটি শুধু নৈতিক প্রতিশ্রুতি নয়, এটি একটি আইনি অঙ্গীকারও বটে।’
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভর ডেন লেন বলেছেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ পোলিশ নাগরিকদের যেসব সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে তা রক্ষা করা আমাদের প্রধান একটি অগ্রাধিকার।’
পোলিশ সংস্কারের সুরক্ষা: গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিংহাম সেন্টার ফর দ্য রুল অব ল’র গবেষক প্যাট্রিক ওয়াকোভিয়েচ বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে, পোলিশ সাংবিধানিক আদালতের রায় আইনের জগতে একটি ‘পোলেক্সিট’-এর সূচনা। কারণ পোলিশ ও ইউরোপীয় আদালতের মধ্যে সহযোগিতা এর ফলে আরও জটিল হয়ে পড়বে। বিশেষ করে কোনো রায় দিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা কঠিন হবে।
প্রধানমন্ত্রী মোরাভিয়েস্কি ও উপপ্রধানমন্ত্রী জারোসø কাজনিস্কি অবশ্য বলেছেন, পোল্যান্ডকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের করে আনার কোনো উদ্দেশ্যই তাদের নেই।