শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জ্যেষ্ঠ অর্থনৈতিক উপদেষ্টা গ্যারি কন পদত্যাগ করেছেন। ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর ট্রাম্পের বড় ধরনের শুল্কারোপের বিরোধিতার জেরেই তাকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর বিবিসি, রয়টার্স।
গত বছরের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই তার টিমের একের পর এক শীর্ষ কর্মকর্তা পদত্যাগ করে চলছেন। এবার এতে যোগ দিলেন অর্থনৈতিক উপদেষ্টাও।
মুক্ত বাণিজ্যে বিশ্বাসী ও ওয়াল স্ট্রিটের ঘনিষ্ঠ ৫৭ বছর বয়সী কন গোল্ডম্যান স্যাকস ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ট্রাম্পের নতুন কর নীতি বাস্তবায়নে তিনিই মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন। পদত্যাগের বিষয়ে কন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের কল্যাণে অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারণ, বিশেষ করে কর নীতি সংস্কারের মতো কাজ করতে পেরে তিনি সম্মানিত বোধ করেন। হোয়াইট হাউজের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, চলে যাওয়ার বিষয়ে ট্রাম্পকে আগে থেকেই জানিয়ে রেখেছিলেন গ্যারি কন।
বিবিসির বিশ্লেষক অ্যান্থনি জারকার মনে করেন, এ পদত্যাগ খুব বেশি চমকে যাওয়ার মতো নয়। ডেমোক্র্যাট শিবিরের কন কাজ করছিলেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের সঙ্গে। বিশ্বায়নে আস্থা রাখা কন যখন দেখেছেন ট্রাম্প রক্ষণশীল অর্থনৈতিক ধারার দিকে ঝুঁকে পড়ছেন, তখন তার সরে যাওয়াটাই স্বভাবিক। হোয়াইট হাউজের একজন কর্মকর্তাও একই ধারণা দিয়েছেন; ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্কারোপের বিরোধিতাই শেষ পর্যন্ত পদত্যাগে গড়িয়েছে। তবে হোয়াইট হাউজের ওই কথা বলেছেন তিনি জানিয়েছেন, শুল্কই একমাত্র বিরোধের বিষয় ছিল না। বরং আরও অনেক বিষয়েই কন একমত হতে পারছিলেন না।
গ্যারি কনের পদত্যাগের ঘোষণার পরে ট্রাম্প এক বিবৃতিতে তাকে ‘বিরল প্রতিভা’ আখ্যা দিয়ে লিখেছেন, ‘ঐতিহাসিক কর নীতি বাস্তবায়ন ও অর্থনৈতিক সংস্কারে তার ভূমিকা অসাধারণ। পরে তিনি টুইটারে লিখেছেন, অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পদে অন্য কাউকে শিগগিরই নিয়োগ দেবেন তিনি। তিনি বলেছেন, ‘অনেকেই নিয়োগ পেতে চায়। ভেবেচিন্তে বেছে নিতে হবে!’
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাই পদত্যাগ করেছেন। গত সপ্তাহে ট্রাম্পের যোগাযোগ পরিচালক হোপ হিকস পদত্যাগ করেছেন। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় রাশিয়ার প্রভাব নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাওয়া ‘হোয়াইট হাউজ ইন্টেলিজেন্স কমিটির’ কাছে তার বক্তব্য পেশ করার পরের দিনই হোপ হিকস পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
কয়েক দিন আগেই মেক্সিকোতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রবার্টা জ্যাকবসন পদত্যাগ করেছেন। তার আগে গত মাসে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের টম শ্যাননসহ আরেকজন কূটনৈতিক পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন। জানুয়ারিতে পানামার রাষ্ট্রদূত পদত্যাগ করার কারণ হিসেবে জানিয়েছেন, তার পক্ষে ট্রাম্পের অধীনে আর কাজ করা সম্ভব না।