শেয়ার বিজ ডেস্কঃ: যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের পাল্টা হিসেবে তিন দশমিক তিন বিলিয়ন ডলার বা দুই দশমিক আট বিলিয়ন ডলারের পণ্যে শুল্কারোপের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। আগামী মাসের শুরুর দিকে এ শুল্কারোপ করা হতে পারে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের পাল্টা হিসেবে তিন বিলিয়ন ডলারের পণ্যে শুল্কারোপ করার ঘোষণা দিয়েছে মেক্সিকো। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য বিরোধ সমঝোতার মাধ্যমে সমাধানের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে চীন। সিএনএন, রয়টার্স।
সম্প্রতি বিভিন্ন ধরনের আমদানি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কারোপের কথা জানানোর পর এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ইইউ শুল্কারোপের পরিকল্পনার কথা জানালো। যুক্তরাষ্ট্রের ওই পদক্ষেপের কারণ তাদের মিত্র দেশ হিসেবে পরিচিত মেক্সিকো, কানাডাসহ ২৮ দেশের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে তিন পক্ষই যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্কারোপ করার কথা জানিয়েছে। এছাড়া বিশ্ববাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) গত মাসেই অভিযোগ দিয়েছে ইইউ। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে প্রতি বছর এক ট্রিলিয়ন ইউরো বা এক দশমিক দুই ট্রিলিয়ন পণ্য ও সেবা বাণিজ্য হয়ে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের পাল্টা হিসেবে ইইউ শুল্কারোপ করবে বলে ধারণা করছিলেন বিশেষজ্ঞরা। গত মার্চ মাসে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র শুল্কারোপের ঘোষণা দেওয়ার পর কোনো কোনো পণ্যে শুল্কারোপ করা যায় তার পরিকল্পনা শুরু করে ইইউ। পরে ডেনিম, ফলের রস, মোটরসাইকেল, বাদামের মাখন, মোটর বোট ও সিগারেটের মতো পণ্যে শুল্কারোপের বিষয়ে চিন্তা-ভাবনার কথা জানানো হয়।
ইউরোপিয়ান কমিশন জানিয়েছেন, বাণিজ্য বিতর্ক অব্যাহত থাকলে কিংবা ডব্লিউটিওর মাধ্যমে এর সমাধান না হলে দ্বিতীয় দফায় আরও তিন দশমিক সাত বিলিয়ন ইউরো বা চার দশমিক তিন বিলিয়ন ডলারের পণ্যে শুল্কারোপ করা হতে পারে। আগামী তিন বছর মেয়াদে বা ডব্লিউটিওর মাধ্যমে এ বিতর্কের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এ শুল্কারোপ অব্যাহত থাকতে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্যবিষয়ক কমিশনার সেসিলা ম্যালমোস্ট্রম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত ছিল একতরফা ও বেআইনি।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের পাল্টা হিসেবে তিন বিলিয়ন ডলারের পণ্যে শুল্কারোপের ঘোষণা দিয়েছে মেক্সিকো। এর মধ্যে শুকরের মাংস, আপেল ও আলুর মতো পণ্য রয়েছে। এর আগে কানাডা প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্যে প্রায় ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কারোপের সিদ্ধান্তের কথা জানায়। আগামী জুলাই থেকে এ শুল্কারোপ কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যবিরোধ আর বাড়তে দিতে চান না বলে জানিয়েছেন চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জাও ফেং। দু’দেশের মধ্যে চলমান আলোচনায় বিষয়টি সমাধান হবে বলেও আশা করছে দেশটি। জাও ফেং জানিয়েছেন, সমঝোতার আলোকে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে তারা আরও বেশি পণ্য আমদানি করা হবে। এছাড়া বড় ধরনের বাণিজ্যিক বিরোধ রোধ করতেও সচেষ্ট হওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। জাও ফেং বলেন, দু’দেশের মধ্যে কৃষি ও জ্বালানি খাতের বাণিজ্য নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে।