এবার বড় স্বপ্ন পূরণের পালা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বেশ কিছু ইস্যুতে কিছুদিন আগে বাংলাদেশের ক্রিকেটে লেগেছিল বড় ধাক্কা। ভারত সফরের শুরুতে সেটা কাটিয়ে উঠতে একটা জয় চেয়েছিল টাইগাররা। গত পরশু দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে মুশফিকুর রহিমের অসাধারণ ব্যাটিং নৈপুণ্যে ঠিক সে কাজটাই করেছে লাল-সবুজ প্রতিনিধিরা। শুধু তা-ই নয়, রোহিত শর্মার দলকে ৭ উইকেটে হারিয়ে রাসেল ডমিঙ্গোর শিষ্যরা তিন ম্যাচ সিরিজে এখন এগিয়ে ১-০ ব্যবধানে। তার মানে, আর একটি ম্যাচ জিতলেই সিরিজ নিশ্চিত। এখন সেদিকেই চোখ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের। গতকাল সে লক্ষ্য পূরণে তারা পৌঁছেছেন দ্বিতীয়

ম্যাচ-ভেন্যু রাজকোটে।

প্রথমবার পূর্ণাঙ্গ ভারত সফরে বাংলাদেশ দলে নেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুই তারকা সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল। যে কারণে টাইগারদের টিম কম্বিনেশন ঠিক করতেই বেশ হিমশিম খেতে হয়েছে। কিন্তু গত পরশু মাঠের ক্রিকেটে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেটা বুঝতেই দেননি আমিনুল ইসলাম বিপ্লব-আফিফ হোসেন ধ্রুব-মুশফিকুর রহিমরা। প্রথম টস হেরে বল হাতে প্রতিপক্ষের ৬ উইকেট তুলে নিয়ে ১৪৮ রানে আটকে দেয় মাহমুদউল্লাহর দল। জবাব দিতে নেমে শুরুতেই লিটন দাসকে হারালেও বাংলাদেশকে পথ হারাতে দেননি অভিষিক্ত মোহাম্মদ নাঈম ও সৌম্য সরকার। দ্বিতীয় উইকেটে ৬ ওভারে ৪৫ রানের জুটি গড়েন তারা। কিন্তু যুজবেন্দ্র চাহাল বোলিংয়ে এলেই দৃষ্টপটের বদল হয়। ২৮ বলে ২৬ রান করে নাঈম ফেরেন বড় শট খেলার লোভ সামলাতে না পেরে। এদিকে সৌম্য সরকার ও মুশফিকুর রহিমও সে সময় খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছিলেন না। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে, ততটাই মুশির ব্যাট চড়াও হয়। অন্যদিকে সৌম্যও খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসেন। ১৭তম ওভারে উইকেটের পেছনে বল পাঠাতে গিয়ে গতিতে বিভ্রান্ত হয়ে বোল্ড হন সৌম্য। ৩৫ বলে ৩৯ রানের ইনিংসে তার ছিল দুই ছয় ও একটি চার।

শেষ ১২ বলে জিততে বাংলাদেশের দরকার ছিল ২২ রান। সে হিসাব মেলাতে গিয়ে ১৯তম ওভারের প্রথম দুই বলে মাত্র ২ রান আসে। পরের চার বলে টানা ৪ মুশফিকের। তাই শেষ ওভারে দরকার পড়ে ৪ রান। প্রথম বলেই ডট দেন মাহমুদউল্লাহ। পরের বলে ২ রান নিয়ে চাপ কমান অধিনায়ক। পরের বলেই ওয়াইড। ম্যাচ টাই। ৪ বলে ১ রান দরকার বাংলাদেশের। ছয় মেরেই জেতালেন মাহমুদউল্লাহ। ৪৩ বলে ৮ চার ও ১ ছয়ে ৬০ রানে অপরাজিত ছিলেন মুশফিক। মাহমুদউল্লøাহ ছিলেন ১৫ রানে অপরাজিত। 

এর আগে টস হেরে বল হাতে নিয়েই শফিউল প্রথম ওভারেই রোহিত শর্মাকে এলবিডব্ল–র ফাঁদে ফেলেন। পরে জ্বলে ওঠেন লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। এ ডানহাতি দ্রুত ফেরান লোকেস রাহুল ও শ্রেয়াস আয়ারকে। তবে টাইগারদের মনে কিছুটা ভয় ধরিয়েছিলেন শেখর ধাওয়ান ও ঋশব পান্ট। তবে বিপজ্জনক এ জুটি ভাঙেন মাহমুদউল্লাহ। রান আউটে তিনি ফেরান ধাওয়ানকে। শেষদিকে অবশ্য আল-আমিনের খরুচে বোলিংয়ে ১৪৮ রানের পুঁজি পেয়ে যায় ভারত। তারপরও সে রান টপকে যেতে খুব একটা সমস্যায় পড়তে হয়নি টাইগারদের।

ভারত সফরের শুরুতেই দাপুটে জয়ের পরও তেমন উদ্যাপন করেনি বাংলাদেশ। আগামী বৃহস্পতিবার রাজকোটে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেই হয়তো সেটা করবে টিম টাইগার্স। মুশফিক অবশ্য ব্যাপারটি নিয়ে এখনও তেমন কিছু ভাবতে চাইছেন না। তিনি এখন থেকেই চোখ রাখছেন পরের ম্যাচে, ‘জয় তো জয়ই। এখনও দুটি ম্যাচ আছে। এখনও সিরিজ জিতিনি। আরও একটি ম্যাচ জিতে যদি সিরিজটি জিততে পারি, তাহলে ইনশাল্লাহ আরও ভালো উদ্যাপন করব।’

দলের দুই সেরা তারকা নেই। স্বাভাবিকভাবেই তাদের খুব মিস করছে বাংলাদেশ। তবে সেই প্রভাব মাঠের ক্রিকেটে পড়তে দিতে চান না মুশফিক। যা গত পরশুই দেখিয়েছেন তিনি। সামনের ম্যাচগুলোতে এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চান এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান, ‘আমরা এখানে প্রতিটি ম্যাচে লড়াই করতে এসেছি। প্রতিদিন একটু একটু করে উন্নতি করা আমাদের মূল লক্ষ্য। অবশ্যই আরেকটি জয়ের দিকে আমরা তাকিয়ে আছি। সেটা হতে পারে পরের ম্যাচেই।’

স্পষ্ট করে কিছু না বললেও মুশফিকের কথাতেই কিন্তু একটু ধারণা পাওয়া যায়Ñরাজকোটেই সিরিজ জয়ের আনন্দে মাততে চাই টিম টাইগার্স। শেষ পর্যন্ত সেটা হলেই বা মন্দ কী।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০