আসাদুজ্জামান রাসেল, রাজশাহী: চলতি মৌসুমে ভুট্টার অধিক ফলনের পাশাপাশি বাজারে ন্যায্য দাম পাওয়ায় হাসি ফুটেছে রাজশাহীর কৃষকদের মুখে। বাড়ি বাড়ি এখন ভুট্টা ছড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে চাষি পরিবারগুলো। জেলার স্থানীয় বাজারে প্রতিমণ নতুন ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে ৬২০-৭০০ টাকায়। যেখানে আগের বছর মণপ্রতি দাম ছিল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে জানা যায়, এ বছর রাজশাহী জেলার বিভিন্ন উপজেলায় রবি ও খরিপে ১৫ হাজার ৬১৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। এর মধ্যে রবি মৌসুমে পাঁচ হাজার ৯৭৫ হেক্টর। আর খরিপ মৌসুমে ৯ হাজার ৬৪০ হেক্টর।
ভুট্টা চাষের অনুকূল আবহাওয়া থাকায় এবার রবি মৌসুমের ভুট্টার উৎপাদন ভালো হয়েছে। চাষি পরিবারে ভুট্টা বাজারজাতকরণের জন্য চলছে শুকানোর কাজ।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পবা উপজেলার নওহাটার পিল্লাপাড়া গ্রামে ভুট্টা ছড়ানো ও শুকাতে থাকেন তোতা মিয়ার দুই ছেলে নবাব আলী ও শহীদ আলী। সঙ্গে রয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা। নবাব আলী ও শহীদ আলী জানান, ভুট্টার আবাদ ভালো হয়েছে। তবে কোনো কোনো ক্ষেতে কালবৈশাখী ঝড়ে আবাদের ক্ষতি হয়েছে। তারা জানান, ভুট্টা আবাদে সেচ ও খরচ কম লাগে। আবার বাড়তি আবাদ হিসেবে ভুট্টার চাষ করে থাকেন চাষিরা। পরিচর্যার তেমন প্রয়োজন না থাকায় চাষিরা ভুট্টা চাষ করতে শুরু করেন।
পবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম মনজুরে মাওলা বলেন, এবার ভুট্টার ফলন ও দাম উভয়ই ভালো। আবাদ ভালো হলে প্রতি শতাংশে এক মণের অধিক ফলন হয়। তিনি বলেন, ভুট্টা আবাদ বাড়ানোর জন্য ঝড়, খরা ও লবণাক্ততা সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবনের পথে রয়েছে। ইতোমধ্যে ঝড় সহিষ্ণু জাত বারি ভুট্টা ১২ ও বারি ভুট্টা ১৩ উদ্ভাবিত হয়েছে।
এ ছাড়া মানুষের খাদ্য হিসেবে ভুট্টার ব্যবহার বাড়াতে সাদা ভুট্টার জাত উদ্ভাবন করা হচ্ছে। ফুল আসার আগে একটি মাত্র সেচ দিয়ে ভুট্টার আবাদ করা সম্ভব এমন জাতও উদ্ভাবন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, উৎপাদন ভালো হওয়ায় কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। তুলনামূলকভাবে সেচ কম প্রয়োজন হওয়ায় জেলার কৃষক এখন ভুট্টার আবাদ করছে। উন্নত বীজ ও দামের নিশ্চয়তা দিতে পারলে ভুট্টা চাষ আরও সম্প্রসারিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।