এবার মাঠে নামছে প্রতিযোগিতা কমিশন

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ভোজ্যতেলের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার কথা বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবৈধ মজুতের প্রমাণও মিলেছে। তবে বাজারে তেল সরবরাহের ক্ষেত্রে যেসব প্রতিষ্ঠান নেতৃত্ব দেয়, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। খুচরা বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হলেও যেসব কারখানায় তেল মজুত করা হয়েছে, বা স্বাভাবিক সরবরাহ আটকে রাখা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এমনকি বিভিন্ন পাইকারি ব্যবসায়ী উপযুক্ত মূল্য পরিশোধ করা সত্ত্বেও কারখানা থেকে তেল সরবরাহ নিতে পারেননি বলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। বিষয়গুলো একাধিকবার গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে। তা সত্ত্বেও এসব রাঘববোয়াল প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে ভোজ্যতেলের বাজারে কারা কারসাজি করছে, অনুসন্ধানের মাধ্যমে তাদের খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রতিযোগিতা কমিশন।

ভোজ্যতেলের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টিকারীদের খুঁজে বের করতে এরই মধ্যে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে প্রতিযোগিতা কমিশন। গতকাল এ বিষয়ে গণমাধ্যমে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠায় কমিশন। এতে উল্লেখ করা হয়, ‘সম্প্রতি ভোজ্যতেলের বাজারে মূল্য বৃদ্ধি ও অস্থিরতা বাংলাদেশে প্রতিযোগিতা কমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ভোজ্যতেলের বাজারে প্রতিযোগিতা-পরিপন্থী কর্মকাণ্ড ও কৃত্রিম সংকটের বিষয়ে প্রতিযোগিতা আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী অনুসন্ধান কাজ পরিচালনার জন্য এরই মধ্যে তিন সদস্যবিশিষ্ট অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়েছে। বাজারে প্রতিযোগিতা-বিরোধী কর্মকাণ্ড পরিলক্ষিত হলে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সচিবের ই-মেইল (ংবপৎবঃধৎু.পপন২০১২Ñমসধরষ.পড়স) বরাবর এ-সংক্রান্ত তথ্য পাঠানোর জন্য সবাইকে আহ্বান জানানো হয়েছে। তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে।’

জানা গেছে, ভোজ্যতেলের অস্থিরতার বিষয়ে বিগত কয়েক সপ্তাহে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে স্বপ্রণোদিত হয়ে অনুসন্ধান করার উদ্যোগ নিয়েছে কমিশন। অনুসন্ধান কমিটি তেলের আমদানি থেকে শুরু করে কারখানায় পরিশোধন, প্যাকেটজাতকরণ, বাজারজাতকরণ ও ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছানো পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করবে। এরপর কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর একটি প্রতিবেদন দাখিল করবে অনুসন্ধান কমিটি। অনুসন্ধানে যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে কমিশনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কমিশনের নিজস্ব বিচারলয়ে মামলা করবেন। সেখানে বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভোজ্যতেলের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক বাণিজ্য সচিব মো. মফিজুল ইসলাম শেয়ার বিজকে বলেন, ‘অনুসন্ধান কমিটি পুরো বাজার ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করে একটি প্রতিবেদন দেবে। তবে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার স্বার্থে এ প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে না। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কমিশনে মামলা করে আইনানুগ পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০