ক্রীড়া ডেস্ক: সিরিজ জয় আগেই নিশ্চিত হয়েছে বাংলাদেশের। তাই বেশ নির্ভার হযেই শনিবার মাঠে নেমেছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু এদিন ব্যাটিংয়ের পুরোটাই মিশে থাকে হতাশা। তাই কোন মতে একশ পার করে মাহমুদউল্লাহ দল। পরে বল হাতে নিয়ে দারুণ শুরু করে একটা পর্যায়ে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করেছিল টিম বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য অ্যাস্টন আগার বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় টাইগারদের সামনে। তাই সিরিজের চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে ৩ উইকেটে হার মানতেই হয়েছে লাল-সবুজ প্রতিনিধিদের। চলতি সফরে অজিরাও পেয় গেল প্রথম জয়।
সিরিজের চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে শনিবার টস জিতে ব্যাটিং নিয়েও ভাল করতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষদিকে মাহেদি হাসানের ১৫ বলে একটি করে চার-ছক্কায় ২৩ রানের ইনিংসে কোনোমতে একশ পার করে স্বাগতিকরা, ৯ উইকেটে তুলে১০৪ রান। পরে বল হাতে শুরুটা ভাল করে টিম টাইগার্স। কিন্তু সাকিবের ১ ওভারে ৩০ রানে ড্যানিয়েন ক্রিস্টিয়ান ম্যাচেন মোড় ঘুরিয়ে। তবে মোস্তাফিজ- মেহেদীরা একটা সময় ফের ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলেন। তারপরও পারেনি তারা। ৬ বল আগেই ৩ উইকেটের হার মানতে হয়েছে।
অল্প পুঁজি নিয়েও শনিবার শুরু থেকেই বল হাতে জাদু দেখায় বাংলাদেশের বোলাররা। এ সুবাদে ম্যাচের প্রথম ওভারে ম্যাথু ওয়েডকে বোল্ড করেন মেহেদী হাসান। এরপর অবশ্য সাকিব আল হাসানের এক ওভারে ৫ ছক্কা হাঁকিয়ে ৩০ রান নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ান। তবে তাকে দ্রুতই থামিয়ে দেন মোস্তাফিজ। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের দ্বিতীয় বলে শামীমের ক্যাচ হওয়ার আগে ক্রিস্টিয়ান করেন ৫ ছয় ও ১ ছয়ে ৩৯ রান। এরআগে বেন ম্যারডোটকে তুলে নেন নাসুম। তাই ম্যাচে ফেরার আভাস মেলে টাইগারদের। যা আরও বাড়িয়ে দেন মোস্তাফিজ, সাকিব ও মেহেদী। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে সাজঘরে ফেরান অ্যালেক্স কারি, হেনরিকস ও মিচেল মার্শকে। সে সময় অজিদের রান ছিল ৬ উইকেটে ৬৫ রান। তবে শেষ রক্ষা করতে পারেনি টিম টাইগার্স। সপ্তম উইকেটে অ্যাস্টন আগার ও অ্যাস্টন টার্নার ধীরে ধীরে ৩৪ রানের জুটি গড়ে ম্যাচের ভাগ্য নিজেদের দিকে নেন৷। শেষ দিকে অবশ্য শামীমের দারুণ ক্যাচে আগারকে (২৭) ফেরান শরীফুল। তারপরও হার মানতেই হযেছে টাইগারদের।
মোস্তাফিজ ৪ ওভারে ৯ রানে নেন ২ উইকেট। মেহেদী ২৭ রানে ২ ও নাসুম রানে নেন ১ উইকেট।
এরআগে শনিবার শুরু থেকেই অজিদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে রান তুলতে বেগ পায় বাংলাদেশ। তাইতো ইনিংসের চতুর্থ ওভারে জস হ্যাজলেউডকে ক্রস খেলতে গিয়ে উল্টোদিকে বল ওপরে তুলে দেন সৌম্য। সহজেই ক্যাচটি নেন অ্যালেক্স কারে। ১০ বলে ১ ছক্কায় সৌম্য করেন ৮। এদিকে নিজেকে শনিবার মেলে ধরতে পারেননি সাকিব আল হাসান। ২৬ বলে ১ চারে ১৫ রানের ধীর ইনিংস খেলে দশম ওভারে হ্যাজলেউডের শিকার হন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। উইকেটরক্ষকের হাতে ধরে পড়ে ফেরেন এ বাঁহাতি।
এরপর মিচেল সোয়েপসনের ঘূর্ণি জাদু। সাকিব আউট হওয়ার পাঁচ বল পর শূন্যতে এলবিডব্লিউ হয়ে যান অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। পরের বলে আরও এক উইকেট সোয়েপসনের। এবার গুগলিতে এলবিডব্লিউ নুুরুল হাসান সোহান (০)। ৫১ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সেই ধাক্কা সামলে ওঠার চেষ্টা করেছিলেন নাইম-আফিফ। কিন্তু ধীরগতির ইনিংস খেলা নাইম সুইপসেনকে সজোরে স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে বল তুলে দেন সোজা ওপরে। সহজ ক্যাচ নেনউইকেটরক্ষক ওয়েড। ৩৬ বলে ২ বাউন্ডারিতে ২৮ রান করা নাইম ফেরার পরের ওভারে আফিফ হোসেন ধ্রুবও উইকেট বিলিয়ে দেন। ১৭ বলে এক ছক্কায় তিনি করেন ২১ রান।
দলের বিপদে শামীম পাটোয়ারীও পারেননি নিজেকে মেলে ধরতে। এবার অ্যান্ড্রু টাইয়ের স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হয়ে ৩ রানে মিডউইকেটে ক্যাচ হন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। শেষ দিকে মেহেদী হাসানের লড়াকু ১৬ বলে ২৩ রানে ভর করে ১০০ পার করে বাংলাদেশ।
অসি বোলারদের মধ্যে অ্যান্ড্রু টাই আর মিচেল সোয়েপসন নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট।