নিজস্ব প্রতিবেদক : আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনী মাঠে নামবে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. আলমগীর। নির্বাচন ভবনে কমিশন বৈঠক শেষে গতকাল তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বিভক্ত ঢাকা সিটির প্রথম নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করেছিল নির্বাচন কমিশন। ওই নির্বাচনে তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব দিয়ে ক্যান্টনমেন্টেই প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। প্রয়োজনে তাদের মুভ করার নির্দেশনা দিয়েছিল ইসি। সে সময় ঢাকা ও মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট এবং ডেমরায় রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছিল ৩ ব্যাটালিয়ন সেনা।
এ বিষয়টি সামনে আনলে ইসি সচিব মো. আলমগীর বলেন, ‘ঢাকার ভোটে সেনা নামানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে সেনা মাঠে না থাকলেও ভোটকেন্দ্রে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা ভোটগ্রহণের সহায়তায় থাকবেন। এক্ষেত্রে তারা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পরিচালনায় টেকনিক্যাল টিম হিসেবে সহায়তা করবেন। নিরস্ত্র পাঁচ হাজারের বেশি সেনাসদস্য মোতায়েন থাকবেন ভোটকেন্দ্রগুলোয়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, জাতীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনীর দায়িত্ব থাকে, সে নির্বাচনে তাদের ডাকা হয়। এটি জাতীয় নির্বাচন নয়, স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এখানে সেনাবাহিনীকে কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ইভিএমে যারা কাজ করবেন তারা সেনাবাহিনীর ফোর্স নয়, টেকনিক্যাল লোক। যারা ইভিএমের এক্সপার্ট তাদের শুধু রাখা হবে।
এদিকে গাবতলীতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়ালের নির্বাচনী প্রচারে হামলার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বলেছে নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার দুপুরে হামলার ঘটনার পর বিকালে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ইসি সচিব মো. আলমগীর।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে ইসির ৫৮তম বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ?মুখোমুখি হন তিনি।
জ্যেষ্ঠ সচিব আলমগীর বলেন, ‘প্রচারে হামলার বিষয়ে কমিশনের কাছে বিএনপি অভিযোগ করেছে। কমিশন বিষয়টি শুনেছে এবং তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য রিটার্নিং অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
ধানের শীষের প্রার্থী তাবিথ অভিযোগ করেছেন, বেলা পৌনে ১২টার দিকে গাবতলীর পর্বতার কলাবাজার এলাকায় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে জনসংযোগে নামলে পুলিশের উপস্থিতিতে তার ওপর হামলা হয়।
বেলা ১১টার দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল চট্টগ্রাম-৮ আসনে পুনর্র্নির্বাচন ও ঢাকার দুই ভাগে ইভিএম ব্যবহারের বন্ধের দাবি জানিয়ে কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন। তখন তারা ঢাকায় তাদের প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের প্রচারে হামলার বিষয়টিও তুলে ধরেছিলেন।
বিএনপির দাবির বিষয়ে ইসি সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপি প্রতিনিধিরা কিছু অভিযোগ করেছেন। কমিশন ধৈর্যের সঙ্গে শুনেছে। কমিশন বলেছে, ভোটের গেজেট হয়ে গেলে তা কমিশনের হাতে থাকে না, এ বিষয়ে (চট্টগ্রাম উপনির্বাচন) আদালতের আশ্রয় নিতে পারেন।’
ঢাকার দুই সিটির ভোট ইভিএমে করার সিদ্ধান্ত থেকেও ইসি পিছু হটছে না।
আলমগীর বলেন, ‘ব্যালটে ভোট হওয়ার সুযোগ নেই। ইভিএমের প্রতি কেন্দ্রে কারিগরি সহায়তার জন্য সেনাসদস্য থাকবে।’