নিজস্ব প্রতিবেদক পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের প্রতিষ্ঠান এবি ব্যাংক পিএলসির নতুন বন্ড ইস্যুর আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ঢাকা স্টক একচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত বছরের সেপ্টেম্বরে ‘এবি ব্যাংক সাব-অর্ডিনেটেড বন্ডস-৫’ নামে নতুন বন্ড ইস্যুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এবি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। রিডিমেবল, নন-কনভার্টেবল ও ফ্লোটিং রেটের বন্ডটির মাধ্যমে ব্যাংকটি ৫০০ কোটি টাকা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এবি ব্যাংকের নতুন বন্ড ইস্যুর আবেদনে অসম্মতি প্রকাশ করেছে বিএসইসি। তবে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবি ব্যাংক পিএলসি।
চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল-জুন, ২০২৪) নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানি এবি ব্যাংক পিএলসি। প্রতিষ্ঠানটির অনিরীক্ষিত আর্থিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে। চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন, ২০২৪) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪ পয়সা, আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ৩১ পয়সা। অর্থাৎ দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইপিএস কমেছে ২৭ পয়সা। অন্যদিকে প্রথম দুই প্রান্তিকে বা প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন, ২০২৪) ইপিএস হয়েছে ১৬ পয়সা, আগের বছরের একই সময় যা ছিল ৪২ পয়সা। অর্থাৎ প্রথম দুই প্রান্তিকের হিসেবে ইপিএস কমেছে ২৬ পয়সা। ২০২৪ সালের ৩০ জুন কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ২৯ টাকা ৪৬ পয়সা। ২০২৩ সালের ৩০ জুনে ছিল ২৯ টাকা ৪৭ পয়সা। এছাড়া প্রথম দুই প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ২৮ টাকা ৬৮ পয়সা (ঘাটতি), অথচ আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৯৫ পয়সা (ঘাটতি)।
২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোম্পানিটি ২ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, আলোচিত সময়ে ইপিএস হয়েছে এক টাকা দুই পয়সা এবং ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ২৯ টাকা ৫৮ পয়সা। আর আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে (এনওসিএফপিএস) ১১ টাকা ২০ পয়সা। এর আগে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য দুই শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচিত সময়ে এবি ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৮৩ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ শেষে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৯ টাকা ৯২ পয়সা। আর এ হিসাববছরে শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ১৯ টাকা ৫০ পয়সা (লোকসান)।
‘বি’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটি ১৯৮৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানির এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৮৯৫ কোটি ৬৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ এক হাজার ৭০১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট ৮৯ কোটি ৫৬ লাখ ৯৪ হাজার ৭৪৯টি শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে, কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে ৩১ দশমিক ২১ শতাংশ, সরকারি শূন্য দশমিক ৫৭ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৩ দশমিক ২৩ শতাংশ, বিদেশি শূন্য দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং বাকি ৪৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে।
এদিকে সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৪ দশমিক ১২ শতাংশ বা ৪০ পয়সা কমে প্রতিটি সর্বশেষ ৯ টাকা ৩০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। ওইদিন ৩৩ লাখ ৭১ হাজার ২৪টি শেয়ার মোট ৯৫৮ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনিম্ন ৯ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ৯ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়। এক বছরের মধ্যে শেয়ারদর ৬ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১৩ টাকা ৮০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে।