Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 2:48 pm

এমএফএসে মাসে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার হুন্ডি: সিআইডি

নিজস্ব প্রতিবেদক: মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা এমএফএস ব্যবহার করে হুন্ডির মাধ্যমে প্রতি মাসে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গত সোমবার রাতে ঢাকা ও কুমিল্লায় অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করার পর গতকাল ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া।

গ্রেপ্তাররা হলেনÑমীর মো. কামরুল হাসান শিশির (২৮), খোরশেদ আলম (৩৪), মো. ইব্রাহিম খলিল (৩৪), কাজী শাহ নেওয়াজ (৪৬), মো. আজিজুল হক তালুকদার (৪২) ও মো. নিজাম উদ্দিন (৩৫)।

তারা হুন্ডির মাধ্যমে ‘কোটি কোটি টাকা’ লেনদেনের সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়ে মোহাম্মদ আলী মালিবাগে নিজের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘হুন্ডির মাধ্যমে লেনদেনের একাধিক চক্র রয়েছে। এমএফএসের দুই হাজার এজেন্ট সিমের মাধ্যমে প্রতি মাসে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পেয়েছে সিআইডি ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ও সাইবার ক্রাইম ইউনিট। গ্রেপ্তাররা হুন্ডি ব্যবসা করে এবং অবৈধভাবে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচার ও বিদেশে অবস্থানরত ওয়েজ আর্নারদের কষ্টার্জিত অর্থ বিদেশ থেকে বাংলাদেশে না এনে স্থানীয় মুদ্রায় মূল্য পরিশোধ করার মাধ্যমে অর্থ পাচার করে আসছে।’

চক্রগুলো তিনটি গ্রুপে কাজ করে বলে জানিয়ে মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, ‘প্রথম গ্রুপ বিদেশে অবস্থান করে প্রবাসীদের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে দেশ থেকে যারা টাকা পাচার করতে চায় তাদের দেয়। দ্বিতীয় গ্রুপে পাচারকারী ও তার সহযোগীরা দেশীয় মুদ্রায় ওই অর্থ এমএফএসের এজেন্টকে প্রদান করে। তৃতীয় গ্রুপ তথা এমএফএসের এজেন্ট বিদেশে অবস্থানকারীর কাছ থেকে প্রাপ্ত এমএফএসের নম্বরে দেশীয় মুদ্রায় মূল্য পরিশোধ করে।’

সিআইডি প্রধান বলেন, ‘গ্রেপ্তার মোহাম্মদ খোরশেদ আলমের মালিকানাধীন কুমিল্লার লাকসামের বিকাশ ডিস্ট্রিবিউশন হাউস ‘জেএ এন্টারপ্রাইজের’ দুই হাজার এজেন্ট সিমের মাধ্যমে প্রতি মাসে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়। দুই হাজার এজেন্ট সিমের বেশকিছু এজেন্ট সদস্য হুন্ডির মতো অবৈধ কাজে সরাসরি জড়িত।’

গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে সিআইডি প্রধান বলেন, ‘ফ্রিডমফ্লেক্সি২৪ডটকম’-এর মতো একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে সৌদি প্রবাসী হুন্ডি কারবারিরা বাংলাদেশে থাকা বিভিন্ন এমএফএস এজেন্টদের সহায়তায় টাকাগুলো সরাসরি পাঠাতেন। চক্রের সদস্যরা বিদেশে সম্পদ অর্জনসহ অনলাইনে জুয়া, ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের ভার্চুয়াল মুদ্রা কেনাবেচা, মাদক কেনাবেচা, স্বর্ণ চোরাচালান, ইয়াবা ব্যবসাসহ প্রচুর অবৈধ ব্যবসাও পরিচালনা করছেন।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সব মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের আওতায় অনেক ডিস্ট্রিবিউশন হাউস আছে। এই ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের মালিকদের উচিত অধীনস্থ যেসব এজেন্ট আছে, তাদের কর্মকাণ্ড মনিটরিং করা। যদি মনিটরিং না করে, তাহলে তারা আইনের আওতায় আসবে।’

প্রবাসীদের বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর আহ্বান জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।