এমন আন্দোলন হবে, যা গত ৫২ বছরে কেউ দেখেনি: দুদু

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘মানুষকে মানুষের মতো বাঁচার সুযোগ দেয়ার জন্য আপনি (প্রধানমন্ত্রী) পদত্যাগ করেন। তা না হলে যে আন্দোলনের মুখোমুখি আপনি হবেন, গত ৫২ বছরে এমন আন্দোলন কেউ কখনও দেখেনি।’

গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি’র প্রতিবাদে এবং ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুসহ সব রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তি’র দাবিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কর্মজীবী দল- ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত মানববন্ধনে এসব কথা বলেন তিনি।

বর্তমানে দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট আওয়ামী লীগ সরকারকে ‘মহাবিপদে ফেলে দিতে পারে’ মন্তব্য করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘আমরা আপনাকে (আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) বিপদে ফেলতে চাই না। আপনারা সসম্মানে যেন প্রস্থান করতে পারেন এবং মানুষের কাছে ভুল স্বীকার করতে পারেন, সে সুযোগ আমরা দিতে চাই।’

গত ৫২ বছরের মধ্যে বর্তমান সরকার দেশকে ‘ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে নিয়ে গেছে’ দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সরকার ভয়ংকরভাবে স্বাধীনতাকে বিপন্ন করেছে। মানুষের জীবনকে বিপন্ন করেছে। দেশের অস্তিত্বকে হুমকিতে নিয়ে গেছে। এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এই সরকারের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে হবে। এ পার্লামেন্ট তথাকথিত নিশি রাতের পার্লামেন্ট। নতুন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। এ কাজগুলো ছাড়া দেশে যে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে তা কাটবে না। এ রাজনৈতিক সংকট ভয়ংকর। রাজনৈতিক সংকট ঘূর্ণিঝড় বা কালবৈশাখী থেকে তীব্র হতে পারে।’

আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্সের নামে পাচার হওয়া অর্থ দেশে আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা লক্ষ করবেন ইদানীং আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্সের নামে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরত আসছে। বিভিন্ন পত্রিকা লিখছে পাচার হওয়া অর্থ তারা দেশে ফিরিয়ে আনছেন। কারণ, এ সরকারি কর্মকর্তা যদি তাদের বউ-বাচ্চা নিয়ে সেখানে (আমেরিকায়) না যেতে পারে, তাহলে এই টাকা সেখানে বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে। যে কারণে আমেরিকা থেকে রেমিট্যান্স আসা বেড়ে গেছে। তাও দেখবেন আওয়ামী লীগ কিছুতেই স্বীকার করবে না যে, তারা খারাপ আছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা স্বীকার করেছেন। তিনি পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, আমেরিকা চাইলে বাংলাদেশের ক্ষমতাকে ওলটপালট করতে পারে। অর্থাৎ ৩ তারিখে ভিসানীতি সরকারের নলেজে আনার পরে সরকারের হুঁশ হয়েছে।’

ভিসানীতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সম্প্রীতি আমেরিকান সরকার একটা ভিসানীতি ঘোষণা করেছেন। এই ভিসানীতি সরকারকে পাঠিয়েছিল অনেক আগেই, ৩ মে। কিন্তু সরকার প্রকাশ করেছে দুই-তিন দিন আগে। আমি বলব, এটা সরকার প্রকাশ করেনি। আমেরিকার মন্ত্রী টুইট করার পর আমরা জানতে পেরেছি। আমেরিকান সরকার শুধু বাংলাদেশের জন্যই এই নতুন ভিসানীতি তৈরি করেছেন।’

প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীকে বিতর্কের মধ্যে ফেলে দিয়েছে সরকার এমন মন্তব্য করে দুদু বলেন, ‘ভোটের ব্যাপারে যদি একটু এদিক-সেদিক হয়, তাহলে তাদের (প্রশাসনের) সন্তানরা যারা নিজের যোগ্যতায় ভিসা পেয়ে সেখানে পড়াশোনা করছেন, সে সন্তানদের দেশে ফেরত আসতে হবে। কারণ, তাদের বাবা-মায়েরা সরকারের পক্ষ নিয়ে ভোটের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে সে জন্য।’

মানববন্ধনে আয়োজক সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন খানের সভাপতিতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির শিশু বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, মুক্তিযোদ্ধা দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, জাতীয়তাবাদী কর্মজীবী দলের সভাপতি সালাউদ্দিন খান পিপিএম, সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন সরদার, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০