নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘এমপিওভুক্তিকরণ কোনো ভালো প্রোগ্রাম না। এমপিওভুক্তিতে যথেষ্ট জালিয়াতি ছিল, এরপরও কেন আপনারা এমপিওভুক্ত করার চেষ্টা করেন?’ বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। জাতীয় সংসদ অধিবেশনে গতকাল (মঙ্গলবার) তরকিত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এমপিওভুক্তির জন্য ওই বছরে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং আপনারা পাবেন। তবে আমি কিছু বলতে চাই, এমপিওভুক্তিটা একেবারেই খারাপ কার্যক্রম, যা আমরা কোনো একটা সময়ে গ্রহণ করেছিলাম এবং এটা এখনও চালিয়ে যাচ্ছি। এমপিওভুক্তিতে শুধু শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হয় এবং তাও সামান্য কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারীদের। শিক্ষার উন্নয়নের জন্য এটা মোটেই যথাযথ কার্যক্রম নয়।’
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘শিক্ষার উন্নয়নের জন্য অনেক ভালো প্রোগ্রাম ছাত্রছাত্রীর উপবৃত্তি। এটা অনেক ভালো প্রোগ্রাম। শিক্ষার উন্নয়নের জন্য শিক্ষার যে উপাদান আছে সেগুলো দেওয়ার জন্য যদি অর্থ দেওয়া যায় সেটা অনেক ভালো কাজ করে। শিক্ষার উন্নয়নের জন্য যদি স্কুল ফিডিংয়ের ব্যবস্থা করতে পারি তাহলে সেটা অনেক ভালো হবে। কেন আপনারা (এমপি) সেগুলোর দিকে মোটেই নজর দেন না এবং বারবার এ এমপিওভুক্তির চেষ্টা করেন।’
আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য গাজী গোলাম দস্তগীর গাজীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘সরকার থেকে ব্যাংক ঋণের সুদের হার নির্ধারণ করা হয় না। ব্যাংক মালিকদের মাঝে মাঝে কিছু পরামর্শ দিয়ে থাকি। ব্যাংক মালিকরা সুদের হার এক ডিজিটে আনার তারিখও দিয়েছেন। সেটা পুরোপুরি কার্যকর হয়নি, কিছুটা হয়েছে। শিগগিরই সেটা পুরোপুরি কার্যকর হবে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংক মালিকরা তাদের টাকা-পয়সা ডিপোজিট দেওয়ার জন্য কিছু দাবি-দাওয়া দিয়েছে। এরই মধ্যে কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছি। এখন বেসরকারি ব্যাংকে যথেষ্ট টাকা পয়সা জমা দিতে পারেন। সরকারি ব্যাংকগুলোকে বলেছি তারাও যেন সুদের হার একটু কমাতে পারে। আমরা যতটুক করতে পারছি, করছি। আশা করছি যেটা অঙ্গীকার করেছেন সেটা শিগগিরই পুরোপুরি কার্যকর হবে।’
এ সময় রাত ১২টার পর মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের (বিকাশ, রকেট ইত্যাদি) মাধ্যমে লেনদেন বন্ধ রাখার কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে গভীর রাতে যেসব এজেন্ট বা গ্রাহকের মোবাইল হিসেবের মাধ্যমে লেনদেন হয় সেসব হিসাব কঠোর নজরদারিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ কথা জানান।
‘মুদ্রানীতির কারণে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ প্রবাহ কমছে’ একেএম রহমতুল্লাহর অপর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘না, এটি সত্য নয়। মুদ্রানীতির কারণে বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহ কমে যাচ্ছে না, বরং বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সবসময়ই অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসংস্থান-সহায়ক এবং বিনিয়োগবান্ধব মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়ে আসছে। ২০১৩ সালের জুন থেকে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই অর্থবছরে শতকরা ১০ দশমিক ৮৫ ভাগ থেকে পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পেয়ে চলতি অর্থবছরের এপ্রিল শেষে তা দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৬৫ ভাগ। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির ফলে অর্থবছর ২০১৭ এর জিডিপির উচ্চ প্রবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে। ওই অর্থবছরের মোট বিনিয়োগের শতকরা ৭৫ দশমিক সাত ভাগই বেসরকারি বিনিয়োগ। জিডিপির মোট বিনিয়োগ ২০১৬ অর্থবছরে শতকরা ২৯ দশমিক সাত ভাগ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৭ অর্থবছরে ৩০ দশমিক পাঁচ ভাগে দাঁড়িয়েছে।’

Print Date & Time : 25 June 2025 Wednesday 8:48 pm
‘এমপিওভুক্তি কোনো ভালো প্রোগ্রাম না’
পত্রিকা,শেষ পাতা ♦ প্রকাশ: