নিজস্ব প্রতিবেদক: মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বহু নির্বাচনী প্রশ্ন (এমসিকিউ) উঠিয়ে দেওয়ার পক্ষে নিজের মত দিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে নবম-দশম শ্রেণির বিজ্ঞানের ছয়টি বইয়ের পরিমার্জিত সংস্করণ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় শিক্ষা আইনের খসড়া শিগগিরই মন্ত্রিসভায় তোলা হচ্ছে বলেও জানান সচিব।
শিক্ষা সচিব বলেন, ‘এমসিকিউ বোধ হয় পরিপূর্ণভাবে উঠিয়ে দেওয়া উচিত। এটা আমার ব্যক্তিগত অভিমত। আমরা নিশ্চয়ই আগামীতে আপনাদের (শিক্ষাবিদ) সঙ্গে বসবো। এবার থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় এমসিকিউ অংশ থেকে ১০ নম্বর কমিয়ে তা সৃজনশীল অংশে যোগ করা হয়েছে। প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে পরীক্ষা শুরুর পর প্রথমেই এমসিকিউ অংশের পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ নিয়ে সমালোচনা হয়। আমরা জবাব দিতে পারি না। যেমন ধরুনÑআমাদের প্রশ্নপত্র নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়। কেউ কেউ এমনও লিখেছেনÑমন্ত্রী, সচিব, উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন আউট করে দিচ্ছেন। কিন্তু বোর্ড চেয়ারম্যানেরও প্রশ্নপত্র দেখার সুযোগ থাকে না। বরং শিক্ষকরাই প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকেন। তাই পরীক্ষার হলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে পরীক্ষা নেওয়া যায় কি না, সে বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। এতেও শিক্ষাবিদদের সহযোগিতা নিতে হবে।’
এমসিকিউ প্রশ্ন তুলে দেওয়ার ব্যাখ্যায় সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান শিক্ষককে যে কোনো উপায়ে কনভিন্স করে ওই কক্ষের সব ছাত্রছাত্রী যেন ৩০ মার্কস পেতে পারে, সে ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। এটা অর্থের বিনিময়ে হচ্ছে বলে আমাদের কাছে রিপোর্ট আসছে।
সবগুলো বিষয়ে যে ৮০’র ওপরে পেয়েছে, একটা বিষয়ে গিয়ে দেখা গেছে সে মূল প্রশ্নে ঠিকমত পেরেছে; কিন্তু এমসিকিউতে গিয়ে সাত-আট পেয়েছে। সেখানে ১০ পাওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে।’
‘রাজধানীর রাজউক কলেজে লিখিত ও এমসিকিউ’র নম্বরে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে’ জানিয়ে সচিব বলেন, ‘সেখানকার ১০ ছাত্র ফেল করেছে। কারণ তারা এমসিকিউতে সাত-আট পেয়েছে। তারা অভিযোগ করে বলেছে, সংশ্লিষ্ট শিক্ষক তাদের খাতা নিয়ে গেছেন। এখানে নিশ্চয়ই কোনো কারণ ছিল; নইলে খাতা নিয়ে গেলেন কেন?’
এ সময় ‘শিক্ষা আইনের খসড়া শিগগিরই মন্ত্রিসভায় তোলা হচ্ছে’ বলেও জানান সচিব সোহরাব হোসাইন। তিনি বলেন, ‘প্রায় ছয় বছর ধরে শিক্ষা আইন প্রণয়নের কাজ চলছে। যে আইনের অভাবে আমরা অনেক কিছু করতে পারি না, সেটি বোধ হয় এ সপ্তাহে মন্ত্রিসভায় তোলার জন্য মোটামুটি ঠিক হয়ে গেছে। খুব কঠিন কঠিন কিছু বিষয় আছে সেখানে, আপনাদের সাহায্য লাগবে; আপনাদের লেখালেখিতেও সাহায্য লাগবে। বেশ কঠিন কিছু বিষয় আছে, যেটা অনেক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হতে পারে। সেজন্য আমরা সব মহলের মতামত, সবার সমর্থন, সবকিছু নেওয়ার চেষ্টা করেছি।’
Add Comment