শেয়ার বিজ ডেস্ক: করোনাভাইরাসের কারণে ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চাকরিচ্যুত হচ্ছেন এয়ারলাইনসগুলোর কর্মীরা। দুই দিন আগে জার্মানির লুফথানসা পূর্ণ সময়ের ২২ হাজার কর্মীকে ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। গত সপ্তাহে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিষ্ঠান এমিরেটস ৬০০ বৈমানিক ও ৭০০ কেবিন ক্রু ছাঁটাই করেছে। গত মাসে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ ১২ হাজার কর্মী ছাঁটাই করার কথা জানিয়েছে। খবর: বিবিসি ও রয়টার্স।
ছাঁটাইয়ের কারণ হিসেবে লুফথানসার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাম্প্রতিক ভবিষ্যতে বিমান পরিবহনের চাহিদা আশানুরূপ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সেই কারণেই এ সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানকে। সংকটজনক পরিস্থিতিতে লুফথানসা ১০০টি উড়ান কম চালাবে বলে জানানো হয়েছে। সেজন্যই সংস্থার পূর্ণ সময়ের ২২ হাজার কর্মীকে সরাতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তাদের মধ্যে অর্ধেক কর্মী জার্মানির। লুফথানসা গ্রুপের মোট এক হাজার ৩৫ হাজার কর্মীর মধ্যে ১৬ শতাংশ ছাঁটাই করা হচ্ছে।
লকডাউনের সময় লুফথানসার ৭৬৩টি উড়োজাহাজের মধ্যে ৭০০টিই আর আকাশে ওড়েনি। সে কারণে প্রায় ৮৭ হাজার কর্মীকে বাধ্য হয়ে সরকারি মদতপুষ্ট ছোট প্রকল্পগুলোতে কাজে লাগাতে হয়েছিল প্রতিষ্ঠানটিকে। প্রথম কোয়ার্টারে দুই দশমিক এক বিলিয়ন ইউরোর লোকসান হওয়ার পর এ প্রতিষ্ঠানটির জন্য ৯ বিলিয়ন ইউরোর বেলআউট প্যাকেজ ঘোষণা করেছে জার্মানির সরকার। এর দ্বারা গ্রুপের ২০ শতাংশ শেয়ার চলে যাবে জার্মানির সরকারের ঘরে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রায়ত্ত এয়ারলাইন এমিরেটস করোনাভাইরাস কবলিত পরিস্থিতিতে কর্মীদের ছাঁটাই করছে। এখন পর্যন্ত ৭৯২ পাইলটকে ছাঁটাই করেছে এয়ারলাইনটি। গত ৯ জুন এক দিনে ৬০০ বৈমানিক ছাড়াও ৭০০ ক্যাবিন ক্রু সদস্যকে ছাঁটাই করেছে এমিরেটস। এর আগে এক বিবৃতিতে এয়ারলাইনটির এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে কাজ করেছেন, এমন দারুণ কয়েকজন মানুষকে এ দুঃসময়ে দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিদায় জানাতে বাধ্য হচ্ছি আমরা।’ তবে চাকরি রক্ষা করতে প্রতিষ্ঠানটি সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে বলেও দাবি করেন তিনি।
ছাঁটাই হওয়া বেশিরভাগ পাইলট এয়ারবাস এ-৩৮০ উড়োজাহাজে প্রবেশনারি ফার্স্ট অফিসার হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। আশঙ্কা রয়েছে, এ-৩৮০ উড়োজাহাজের কার্যক্রম কমাতে চাচ্ছে এমিরেটস। এমিরেটসে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ কাজ করেন। বিশাল এ কর্মিসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ ছাঁটাই করার কথা ভাবছে প্রতিষ্ঠানটি।
ইউরোপের বৃহৎ বিমান পরিবহন সংস্থাটি ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান আইএজি গত ৩০ এপ্রিল ১২ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের পক্ষ থেকে কর্মচারী ইউনিয়নকেও চিঠি দেওয়া হয়। তাতে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে কোম্পানি পুনর্গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
আইএজি স্প্যানিশ এয়ারলাইন আইবেরিয়ারও পরিচালনা করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, করোনার প্রভাবে প্রথম প্রান্তিকে তাদের আয় কমেছে ১৩ শতাংশ। দ্বিতীয় প্রান্তিকে আরও বেশি লোকসানের পূর্বাভাস দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।