শেয়ার বিজ ডেস্ক: অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং বৈশ্বিক ঋণ ব্যবস্থায় কঠোরতা সত্ত্বেও এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ব্যবসায়িক অবস্থা আগের তুলনায় ভালো হয়েছে। গত দুই বছরে এ অঞ্চলে ব্যবসায়িক অবস্থা সাত দশমিক তিন শতাংশ উন্নতি হয়েছে। এশিয়া প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন বা অ্যাপেক’র পলিসি সাপোর্ট ইউনিট পরিচালতি এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর সিনহুয়া।
ওই প্রতিবেদন মতে, সহজে ঋণ পাওয়া, নতুন ব্যবসা শুরু করা, নির্মাণ অনুমোদন নিয়ে চুক্তি, চুক্তি বাস্তবায়ন, সিমান্ত বাণিজ্যসহ বিভিন্ন বিষয় এ অঞ্চলের ব্যবসায়িক অবস্থার উন্নতিতে বড় ভূমিকা রেখেছে। অ্যাপেক পলিসি সাপোর্ট ইউনিট এবং প্রতিবেদনে প্রধান লেখন কার্লোস কুরিয়ামা বলেন, ‘অ্যাপেকভুক্ত দেশগুলোর কর্মকর্তারা তাদের নীতিনির্ধারণে মানের দিকটি বজায় রেখেছে। দেশগুলোর নীতি এ অঞ্চলে ব্যবসা করার জন্য সহায়ক।
প্রতিবেদন মতে, এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নতুন ব্যবসা বেড়েছে ১১ দশমিক আট শতাংশ। গত দুই বছরে এ অঞ্চলে সিমান্ত বাণিজ্য বেড়েছে ছয় দশমিক পাঁচ শতাংশ। এছাড়া দ্রুত প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং ই-প্লাটফর্ম আন্তর্জাতিক লেনদেন বাড়াতে বড় ভূমিকা রেখেছে। কুরিয়ামা বলেন, অ্যাপেকভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের পেছনে কাজ করেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ব বাণিজ্যে অস্থিরতা বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সংরক্ষণবাদ নীতি। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়া ও ভূ-রাজনৈতক ঝুঁকিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টিন লাগার্দে সম্প্রতি সতর্ক করে বলেছেন, বাণিজ্যযুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করবে। তিনি বলেন, বাণিজ্যযুদ্ধে কেউ লাভবান হবে না, এতে বিশ্বব্যাপী নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
গত জুলাইয়ে তিন হাজার ৪০০ কোটি ডলারের চীনা পণ্যে শুল্কারোপ কার্যকর করে যুক্তরাষ্ট্র। চীনও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে তাৎক্ষণিকভাবে সমমূল্যের মার্কিন পণ্যে শুল্ক ধার্য করে। ওই সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, আরও কয়েক হাজার চীনা পণ্যে ১০ শতাংশ হারে শুল্কারোপ করার প্রক্রিয়া চলছে। ট্রাম্পের সংরক্ষণবাদ নীতির আওতায় গত মার্চে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর যথাক্রমে ২৫ শতাংশ ও ১০ শতাংশ শুল্কারোপের ঘোষণা দেওয়া হয়। সে সময় ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে’ তিনি ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুল্কারোপের সিদ্ধান্তটি কার্যকর হয় ১ জুন। এতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ), কানাডা, মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্য ঘনিষ্ঠ মিত্রদের বাণিজ্যের ওপর প্রভাব পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে মার্কিন পণ্যে পাল্টা শুল্কারোপ করেছে ইইউ। ২৮০ কোটি ইউরো মূল্যের মার্কিন পণ্যে আমদানি শুল্কারোপের সিদ্ধান্তটি ২২ জুন থেকে কার্যকর হয়। পাল্টা হিসেবে এক হাজার ২০০ ডলারের মার্কিন পণ্যে শুল্কারোপ করেছে কানাডাও। এসব কারণে বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে প্রশান্ত মহাসগরীয় অঞ্চলের বাণিজ্য বৃদ্ধির খবর ইতিবাচক দেখছেন বিশ্লেষকরা।