ভুটানের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই)। দেশটির বেশিরভাগ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে এ খাতে। তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রয়েছে এ খাতের। এমনকি আঞ্চলিক সাম্যতা আনয়ন ও দারিদ্র্যের হার কমাতেও দেশটিতে এসএমই’র গুরুত্ব রয়েছে।
ভুটান সরকারের মিনিস্ট্রি অব ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্সের তথ্য অনুযায়ী, ক্ষুদ্র পর্যায়ের একটি প্রতিষ্ঠানে পাঁচ থেকে ১৯ জন কর্মী থাকা প্রয়োজন। এক থেকে ১০ মিলিয়ন গুলট্রাম (ভূটানের মুদ্রা) মূলধন থাকতে হবে এমন প্রতিষ্ঠানে। মাঝারি পর্যায়ে কর্মীর সংখ্যা ২০ থেকে ৯৯ জন। আর মূলধন ১০ থেকে ১০০ মিলিয়ন গুলট্রাম। ১০০ মিলিয়ন গুলট্রামের বেশি মূলধন হলে সে প্রতিষ্ঠান বৃহৎ শিল্পের মধ্যে পড়ে।
দেশটিতে ১৯৬১ সালে প্রথমবারের মতো পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা করা হয়। সেই পরিকল্পনায় এসএমই খাতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। ২০১২ সালে এ খাতের উন্নয়নে ‘সিএসএমআই ডেভেলপমেন্ট স্ট্র্যাটেজি (২০১২-২০)’ ঘোষণা করে দেশটির সরকার। এখন তাদের মোট প্রতিষ্ঠানের ৯৮ শতাংশই এসএমইনির্ভর।
এত কিছুর পরও ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানে কাঁচামাল, মানবসম্পদ, বিপণন, অবকাঠামো, প্রযুক্তি, মূলধন প্রভৃতির স্বল্পতা রয়েছে। আশার কথা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, শান্তি, নিরাপত্তা, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য, প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশ ও জ্বালানিশক্তির সহজলভ্যতার কারণে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে তাদের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প।
ভুটান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিআই) সহায়তা করে থাকে সব প্রতিষ্ঠানকে। তারা দেশটির নানা উদ্যোক্তাকে প্রণোদনা দিয়ে থাকে। এছাড়া এসএমই উন্নয়নে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক সহায়তা করে থাকে।
তবে দেশটির সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক থেকে ঋণপ্রাপ্তি নিয়ে ঝামেলা পোহাতে হয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের। ব্যাংকগুলো মূলত বৃহৎশিল্প প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়ে থাকে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিতে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এছাড়া ঋণের বেলায় জেন্ডার বৈষম্যও রয়েছে সেখানে। সহজে ঋণসুবিধা নিশ্চিত করা হলে এসএমই খাতে উন্নতি ঘটবে বলে মনে করে সংশ্লিষ্টরা।