নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টগুলো (এসডিজি) অর্জনে ২৩১ ধরনের উপাত্ত লাগবে। এর মধ্যে পূর্ণাঙ্গভাবে ৭০ ধরনের উপাত্ত আছে। আর ১০৮ ধরনের উপাত্ত আংশিক আছে। এগুলো কিছুটা সংশোধন করলে ব্যবহার করা যাবে। আর ৬৩টি সূচকের কোনো উপাত্ত নেই। এগুলো নতুন করে প্রস্তুত করতে হবে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে গতকাল এসডিজি বাস্তবায়নে উপাত্ত ঘাটতি বিশ্লেষণ’ বিষয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ কথা জানানো হয়।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) ড. শামসুল আলম বলেন, ‘এসডিজি সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য আমরা এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছি। উপাত্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি আমাদের কী ধরনের উপাত্ত আছে এবং আরও কী ধরনের উপাত্ত প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, এসডিজি অর্জনে উপাত্ত ঘাটতি বিশ্লেষণ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মোট উপাত্তের ২৯ শতাংশ পাওয়া যাচ্ছে। ৪৫ শতাংশ উপাত্তের আংশিক পাওয়া যাচ্ছে, যা কিছুটা সংযোজন করা প্রয়োজন। বাকি ২৬ শতাংশ উপাত্ত পাওয়া যাচ্ছে না।’
এসডিজির ১৭টি বৈশ্বিক অভীষ্টের অধীনে ১৬৯টি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে প্রয়োজন ২৩১ ধরনের উপাত্ত। উপাত্তের এ ঘাটতি পূরণে উপাত্ত সংগ্রহের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া হাওরের উন্নয়নে সমন্বিত মাস্টারপ্ল্যান ও ইজারা প্রথা বাতিল এবং ব্যাংকিং খাতে জনসম্পৃক্ততা বেড়ে যাওয়ার উপাত্ত তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ৪০ ফুট বাঁধ কেন, হিমালয়ের মতো বাঁধ দিলেও হাওর রক্ষা করা যাবে না। তাই চিন্তা করতে হবে হাওরকে কীভাবে বশীভূত করা যায়। এ ক্ষেত্রে দেশি ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিয়ে মাস্টারপ্ল্যান করতে হবে। তিনি বলেন, ‘পুরো হাওরাঞ্চলের জন্য সমন্বিত পরিকল্পনার প্রয়োজন। হাওরের সম্পদ খাতে সঠিক ব্যবহার করে যেন সবাই সমান সুবিধা ভোগ করতে পারে, সে জন্য সমন্বিত পরিকল্পনার সঙ্গে হাওরাঞ্চলের মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিত, ব্যাংকিং অ্যাটলাস’ ও ‘হাওরাঞ্চলের পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন’ শীর্ষক আরও দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
‘বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিত, ব্যাংকিং অ্যাটলাস’ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, উপজেলা পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি হয়েছে ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে। অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিমূলক কার্যক্রমে ব্যাপক উন্নতির বার্তা বহন করে এ পরিস্থিতি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এবং ইউএনডিপির বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জি। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) অধ্যাপক সৈয়দ মুনির খসরু, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) মহাপরিচালক তৌফিক আহমেদ চৌধূরী এবং ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. হামিদুল হক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের প্রধান ও এসএসআইপি প্রকল্পের পরিচালক নকিব বিন মাহ্বুব।
Add Comment