এসডিজি বাস্তবায়ন-বিষয়ক সভা: এনজিও খাতে ১০০ কোটি টাকার তহবিল গঠনের আহ্বান

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : শুধু সরকারের উদ্যোগের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টগুলো (এসডিজি) বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এজন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। সেজন্য বেসরকারি সংস্থাগুলোর জন্য অর্থায়নের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে বিদেশি অর্থায়নের ওপর নির্ভর না করে সরকারকেই নিজস্ব অর্থায়নের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। এজন্য এসডিজি বাস্তবায়ন কার্যক্রমে এনজিওগুলোর জন্য ১০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করা প্রয়োজন।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনস্থ এনজিও-বিষয়ক ব্যুরো ও এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করে। এনজিও ব্যুরোর মহাপরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সভার প্রারম্ভিক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি-বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, এসডিজি-বিষয়ক নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম, পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। পরে আরও দুটি সেশনে অংশ নেন মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির, সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান প্রমুখ।

সভায় বক্তারা বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি বৈষম্য নিরসন ও মানবাধিকার নিশ্চিতের দিকেও লক্ষ্য করছে এসডিজি। এর অধীনে বিস্তৃত লক্ষ্যমাত্রাগুলো বাস্তবায়নের নীতি গ্রহণে বাংলাদেশ অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে আছে। কিন্তু এখন এনজিও ও সরকারি সংস্থার মধ্যে সমন্বয় সাধন করা দরকার। এ প্রসঙ্গে এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নের প্রয়োগ ও নজরদারি উভয়ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বয় কার দরকার। অনেক এনজিও একাধিক সেক্টরে কাজ করে। অনেকে সুনির্দিষ্ট খাতে কাজ করে। তারা প্রত্যেকে নিজ নিজ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে পারে।

তিনি বলেন, এ বছর সরকারি কার্যক্রমের হিসাব নিয়ে জাতিসংঘে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী বছর থেকে বেসরকারি কাজেরও হিসাব আনা হবে। এ সময় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম সরকারের কার্যক্রমের বিশদ ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে এসডিজি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এর প্রতিফলন  দেখানো হয়েছে। ১৬৯টি লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের জন্য ৪০০-এর মতো বিষয়ে দৃষ্টি দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা তথ্য সংগ্রহ করলেও ৬৩টি বিষয়ে এখনও সরকারের কাছে তথ্য নেই।  সেগুলোর বিষয়ে অগ্রগতি হবে দ্রুতই। অগ্রগতির ভিত্তিতে বাংলাদেশ অগ্রগামি ১৮টি দেশের মধ্যে একটি।

কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, অবহেলিতদের বাদ দিয়ে উন্নয়ন সম্ভব নয়। সেজন্য দলিত, প্রতিবন্ধী, উপকূলীয়-দ্বীপ ও হওরবাসী, হিজড়া, ভিক্ষুকদের উন্নয়নেও কাজ করা হচ্ছে। অবহেলিত এসব জনগণের উন্নয়নের জন্য পিকেএসএফ সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করে সেখান থেকে সহায়তা দিচ্ছে বলে তিনি জানান। ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য বলেন, এনজিওগুলো বিদেশি অর্থায়নের ওপর নির্ভর করে উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড করছে। কিন্তু এতে কাজ হবে না। সরকারি উদ্যোগে একশ কোটি টাকার একটা ফান্ড গঠিত হতে পারে। এর মধ্য থেকে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে বিভিন্ন এনজিওকে অর্থায়ন করা যেতে পারে তাদের সুনির্দিষ্ট অভীষ্ট বাস্তবায়নের জন্য। এছাড়া জাতীয় অর্থনীতিতে এনজিওগুলোর অবদান কী তারও হিসাব হওয়া দরকার। সরকারি, ব্যক্তিখাত ও এনজিওর সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমেই টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টগুলো বাস্তবায়নের দিকে অগ্রসর হতে হবে। এ সময় পরবর্তী সেশনে অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান তার এক প্রতিবেদনে বৈশ্বিক নানা চ্যালেঞ্জ ও এনজিওগুলোর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

 

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০