এস আলমের হাত থেকে ছুটে গেল ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকও

নিজস্ব প্রতিবেদক: এস আলমের কাছ থেকে ছুটে গেল এবার ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকও। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেই সঙ্গে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক এমডি মোহাম্মদ আব্দুল মান্নানকে চেয়ারম্যান করে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। গতকাল রোববার পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়। এর আগে এস আলম পাঁচটি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ হারান।
বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল রোববার এক আদেশে বলেছে, ব্যাংক কোম্পানি আইনের ক্ষমতাবলে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করা হয়েছে, যে সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে।
একই আদেশে বলা হয়েছে, আমানতকারী ও ব্যাংকের স্বার্থ রক্ষার্থে এবং ব্যাংকিং সুশাসন নিশ্চিত করা ও জনস্বার্থে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ক্ষমতাবলে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ নতুনভাবে গঠনের জন্য পাঁচজনকে স্বতন্ত্র পরিচালক পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
ব্যাংকটির নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদের অন্য সদস্যরা হলেনÑবাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক আজিজুর রহমান, উত্তরা ব্যাংকের সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল কুদ্দুছ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমসের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুল আলম এবং হিসাববিদ রাগিব আহসান, এফসিএ।
এস আলম গ্রুপ ২০০৪ সালে সিকদার গ্রুপের কাছ থেকে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এই ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম নিজেই ছিলেন। এস আলম নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ব্যাংকটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকে রূপান্তর করা হয়। ব্যাংকটির ঋণ প্রায় ৫৬ হাজার কোটি টাকা। এই ঋণের প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা এস আলম গ্রুপ ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্টদের দখলে।
ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ইউনিয়ন ব্যাংকের শেয়ার কিনে সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। পরে তার পরিবারের এক সদস্যকে ওই ব্যাংকের পরিচালক করা হয়েছিল। তার মৃত্যুর পর সেই শেয়ার হস্তান্তর হয়েছে, কিন্তু ঋণ শোধ হয়নি। বছরের পর বছর এসব ঋণ আদায় না হলেও খেলাপি দেখানো হয়নি। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে থাকা চলতি হিসাবে সিআরআরসহ ৭ আগস্ট ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। ব্যাংকটির অনিয়ম প্রকট হওয়ায় গত বছর ব্যাংকটিতে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এতেও কাজ না হওয়ায় অবশেষে পর্ষদ ভেঙে দিয়ে এস আলম মুক্ত হলো।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের বেশ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকের পর্ষদে পরিবর্তন এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করে দেয়া হয়েছে। পষর্দ ভাঙার আগে অধিকাংশ ব্যাংকই ছিল এস আলমের দখলে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০