নিয়াজ মাহমুদ, চট্টগ্রাম থেকে ফিরে: দেশের অন্যতম শিল্প গ্রুপ এস আলমের জন্য ২০টি লাইটার জাহাজ নির্মাণ করতে যাচ্ছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেড। এ লক্ষ্যে শিগগিরই একটি চুক্তি স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য এ পর্যন্ত ১৪০টি জাহাজ নির্মাণ করেছে ওয়েস্টার্ন মেরিন। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এস আলম গ্রুপের জাহাজ নির্মাণে শিপইয়ার্ডটি পুরোপুরি প্রস্তুত। এ শিপইয়ার্ডে আন্তর্জাতিক মানের জাহাজ তৈরি করা হয়। তাই ওয়েস্টার্ন মেরিন থেকে উন্নতমানের ২০টি লাইটার জাহাজ নির্মাণে এস আলাম গ্রুপ আগ্রহী।
এ বিষয়ে ওয়েস্টার্ন মেরিনের টেকনিক্যাল পরিচালক আরিফুর রহমান খান শেয়ার বিজকে বলেন, আমাদের তৈরিকৃত জাহাজের গুণগত মান ভালো হওয়ায় এখন দেশি-বিদেশি শিল্প গ্রুপ আমাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। এমনকি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের জাহাজও নির্মাণ করছে ওয়েস্টার্ন মেরিন।
কেনিয়ার কোস্টগার্ডের জন্য নির্মাণাধীন হেলিপ্যাড জাহাজসহ ভারতীয় কোম্পানি জিন্দাল গ্রুপের জন্য ১০টি পণ্যবাহী জাহাজের নির্মাণকাজ চলছে বলে জানান তিনি।
তিনি জানান, কেনিয়ার জন্য নির্মাণাধীন জাহাজটির কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের শুরুর দিকে। আগামী এপ্রিলে দেশে নির্মাণাধীন প্রথম হেলিপ্যাড যুক্ত জাহাজটি কেনিয়া সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। জাহাজটি নির্মাণে ব্যয় হবে ১৫০ কোটি টাকা।
সম্প্রতি চট্টগ্রামে ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) এমভি উত্তরণ এক্সপ্রেস নামক জাহাজটির নির্মাণকাজ প্রায় শেষ। কেনিয়ার অত্যাধুনিক জাহাজটির কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ৮০ শতাংশ। এছাড়াও ভারতীয় প্রতিষ্ঠান জিন্দালের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে একাধিক জাহাজ।
জানা গেছে, শিপইয়ার্ডে দুই শিফটে দৈনিক প্রায় দুই হাজার শ্রমিক কাজ করেন। এর মধ্যে ৩৫০ জন স্থায়ী। মেরিন প্রকৌশলী রয়েছেন শতাধিক।
২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের কোম্পানি সচিব মো. শাহাদাত হোসেন এসিএ বলেন, ২০০২ সাল থেকে কার্যক্রম শুরুর পর থেকে ১৬০টি জাহাজ নির্মাণের ক্রয়াদেশ পেয়েছে ওয়েস্টার্ন মেরিন। এরই মধ্যে ১৪০টি জাহাজ সরবরাহ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, প্রকৌশল খাতের এ কোম্পানিটি আইপিওর মাধ্যমে ১৫৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা সংগ্রহ করে। প্রতিষ্ঠানটি বাজারে সাড়ে ৪ কোটি শেয়ার বিক্রি করেছে। আইপিওতে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতি শেয়ারের জন্য ৩৫ টাকা নেওয়া হয়। এর মধ্যে ২৫ টাকা প্রিমিয়াম।
পুঁজিবাজার থেকে সংগৃহীত অর্থ ব্যাংকঋণ পরিশোধ, অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় বাবদ খরচ করা হয় বলে জানান কোম্পানি সচিব।
Add Comment