এ জন্য তো আমরা যুদ্ধ করিনি: ডা. জাফরুল্লাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক : গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করে এক কলেজছাত্রের বিতর্কিত স্ট্যাটাসের জের ধরে নড়াইলের দিঘলিয়া সাহাপাড়ায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘর-বাড়ি, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান একাধিক মন্দির ও বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আমার অন্তরে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এজন্য তো আমরা যুদ্ধ করিনি। আমাদের এই ভাইদের (আক্রান্তদেরকে) যদি বাঁচাতে না পারি।

রোববার (১৭জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে দিঘলিয়ার সাহাপাড়ায় হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের ঘর বাড়ি ও মন্দির পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আরও বলেন, আপনাদের ওপর যে অত্যাচার হয়েছে- এমন ন্যক্কারজনক ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত হয়েছি। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা আপনাদের পাশে আছি। দূরে থাকলেও যে কোনো বিপদ আপদে আমরা অন্তরে আপনাদের সঙ্গে আছি।

এছাড়া প্রশাসনকে সঠিক তদন্ত করে জড়িতদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান তিনি। তার সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন-গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, মুক্তিযোদ্ধা ইশতিয়াক আজিজ উলফাত ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু, উপ সদস্য সচিব সাফায়েত কামাল দিব্য, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এস এম শহিদ বাবলু, মুক্তিযোদ্ধা হাকিম, এডভোকেট মুকিত প্রমুখ।

এসময় তারা স্থানীয় দিঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ বোরহান উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা বনিরুল ইসলাম বনি, সৈয়দ মিরাজুল ইসলাম নয়নসহ ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেন। এছাড়া আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া গোবিন্দ সাহার পরিবারকে পাঁচ হাজার টাকা সহযোগিতাও করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

প্রসঙ্গত, লোহাগড়ার দিঘলিয়া সাহাপাড়ার অশোক সাহার ছেলে ও দিঘলিয়া নবগঙ্গা ডিগ্রি কলেজের স্নাতক (পাশ) ১ম বর্ষের ছাত্র আকাশ সাহার (২০) বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এরই জের ধরে শুক্রবার (১৫ জুলাই) জুমার নামাজের পর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের নজরে বিষয়টি আসার পর ওই শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে তার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করে বিক্ষুব্ধ জনতা।

পরে সন্ধ্যায় উত্তেজিত জনতা দিঘলিয়া বাজারে বিক্ষিপ্তভাবে নিত্য দুলাল সাহা, অনুপ সাহা, অশোক সাহা, সনজিদ সাহার মুদি দোকান এবং গোবিন্দ কুণ্ডু ও গৌতম কুণ্ডুর মিষ্টির দোকান হামলা করে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।

এছাড়া সাহাপাড়ার গৌরসাহা, চায়না রানী সাহা, বিপ্লব সাহার বাড়িঘর ও আসবাবপত্র ভাঙচুর, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় তারা গোপাল সাহার বসতঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং লুটপাট করে। আগুনে ওই টিনশেড ঘরটি পুড়ে ভস্ম হয়ে গেছে। উত্তেজিত জনতা রাত ৯টার দিকে আখড়াবাড়ী সার্বজনীন সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেয়।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে সাহাপাড়া আরেকটি মন্দিরের চেয়ার ও সাউন্ড বক্স এবং শশ্মান মন্দিরেও হামলা করে ভাঙচুর করে। এরপর উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন বলে এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০