এ. টি. হক লিমিটেড

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ভোগ্যপণ্য উৎপাদন ও বিপণন প্রতিষ্ঠান এ. টি. হক লিমিটেড। প্রতিষ্ঠার শুরুতেই ভোক্তাদের আস্থা অর্জন করে এর সব পণ্য। প্রাথমিক পর্যায়ে বিস্কুট, কনফেকশনারি, সাবান ও ব্যাটারি প্রস্তুত করত প্রতিষ্ঠানটি। সময়ের পরিক্রমায় বিভিন্ন সময়ে যোগ করেছে আরও অনেক পণ্য। সব ধরনের পণ্য সমাদৃত হয়েছে ভোক্তাদের কাছে। সব ক্ষেত্রে ভোক্তাদের চাহিদায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে তাদের নতুন পণ্যগুলো।
১৯৪৭ সালে পথচলা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। ‘বেকার টু দি নেশন’ সেøাগান নিয়ে দেশের সেবা করার জন্য ব্যারিস্টার তমিজুল হক এটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ১৯৫৭ সালের জানুয়ারিতে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রথম কারখানাটি প্রতিষ্ঠা করেন। ওই কারখানায় মি. কুকি, ক্রিম ক্র্যাকার্স, বোউরবন ও ডাইজেসটিভ বিস্কুট উৎপাদন করা হতো। পণ্যগুলো উৎপাদনে বিশ্বের সেরা মেশিনের ব্যবহার শুরু করেন তিনি।
১৯৬৫ সালে ‘হক কার্বাইড’ নামে টঙ্গীতে একটি কার্বাইডের কারখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়। এখানে ‘হক ব্যাটারি ৭৮৬’ উৎপাদন করা হয়। অল্প সময়ের মধ্যে বিখ্যাত ব্র্যান্ডে পরিণত হয় এটি। ১৯৮৮ সালের জুলাইয়ে টঙ্গীতে সাবান তৈরির কারখানা নির্মাণ করা হয়। টঙ্গীতে ১৯৯৪ সালে ড্রাইসেল ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠা করা হয়।
বর্তমানে এ. টি. হক লিমিটেডে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন জোসনা আদম হক। ব্যবস্থাপনা টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন আদম তমিজি হক। তিনি ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব বুঝে নেন। মাত্র দুই বছরের মধ্যে প্রতিযোগীদের ছাড়িয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে অনন্য স্থানে নিয়ে যান তিনি। তার সুযোগ্য নেতৃত্ব ও তত্ত্বাবধানের কারণে বিস্কুট উৎপাদনে দেশের জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয় এ. টি. হক লিমিটেড। অল্প সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির সম্পদের পরিমাণ প্রায় ২৫ গুণ করে তোলেন। আধুনিক চিন্তাচেতনায় বিশ্বাসী আদম তমিজি হক। মূলত তার উৎসাহ, উদ্দীপনা ও কৌশলগত দিকনির্দেশনায় চলছে প্রতিষ্ঠানটি। ভোক্তা পর্যায়ের চাহিদা বিবেচনায় রাখেন তিনি। এ বিষয়ে পূর্বানুমান করে নব পদ্ধতি উদ্ভাবনে দক্ষতা অর্জন করে চলেছেন। ব্যবসায়িক উদ্যোগের পাশাপাশি সামাজিক ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন নিবিড়ভাবে। গাজীপুরে কয়েকটি মসজিদের উন্নয়নসহ আঞ্জুমান হেদায়াতুল উম্মত এতিমখানার তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে রয়েছেন। কক্সবাজারের হিমছড়িতে তমিজুল হক কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি।
ব্যবস্থাপনা টিমের দূরদর্শিতা ও পরিশ্রমকে আরও বেগবান করছে প্রতিষ্ঠানটির জনশক্তি। বর্তমানে এখানে কর্মরত রয়েছেন এক হাজার ৭৩ কর্মী। কর্মীরাই প্রতিষ্ঠানটির প্রাণÑএমনই মনে করে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। শ্রেষ্ঠত্বের ওপর ভিত্তি করে সুন্দর কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটি।
বর্তমানে এ. টি. হকের পণ্যের সংখ্যা ৮৪। ব্র্যান্ড ৫০টি। কারখানা দুটি।

কনসার্ন

হক ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড

হক লিমিটেড

হক কার্বাইড লিমিটেড

হক ড্রাইসেল লিমিটেড

জুনু বিচ রিসোর্ট

হক রিক্রিয়েশনাল প্রোডাক্টস লিমিটেড

হক ইমপেরিয়াল প্রোপার্টিজ লিমিটেড

ওয়ার্ল্ড ট্রাভেলার

করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে সমাজের জন্য কাজ করে থাকে এ. টি. হক লিমিটেড। বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য আর্থিক সহায়তা করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য বিনা খরচে মেডিক্যাল ক্যাম্পের আয়োজন করে তারা। এর মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক মাসে বনানী আনসার ক্যাম্প, কড়াইল বস্তি, মহাখালী সাততলা বস্তি পুলিশ ফাঁড়ি, মেডিক্যাল কোয়ার্টার মহল্লা, কালাপানি, বেগুনটিলা-মিরপুর ১২, ফুলবাগান বস্তি-মিরপুর ১০, ব্লক ই বস্তি-মিরপুর ১২, সবুজবাগ বস্তি-মিরপুর ১১, ওয়াপদা বস্তি-মিরপুর ১০, কালশী বস্তি বালুর মাঠ, বিজলী মহল্লা, জান্নাতবাগ-মো.পুর, রূপসী বাংলা বস্তি-ভাসানটেক, ১নং বস্তি-ভাসানটেকসহ ২০টি স্থানে ৩০টি ক্যাম্প পরিচালনা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। শুধু তা-ই নয়, রোগাক্রান্ত ব্যক্তির উন্নত চিকিৎসাসেবার জন্য প্রায়ই পরিবারসহ তাদের বিদেশে পাঠানো হয়। এই ধারা সবসময় অব্যাহত রেখে এগিয়ে যেতে চায় তারা। গরিব, দুঃখী ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে থাকতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। মানবতার সেবায় কর্তৃপক্ষ বেশ আন্তরিক।
নিয়মমাফিক ও আইনগতভাবে গুণগত মান ও পরিমাণের প্রতিশ্রুতি পূরণ করে চলেছে এ. টি. হক লিমিটেড। এই প্রতিশ্রুতি পূরণের মাধ্যমে ভোক্তা সম্প্রদায় ও সরবরাহকারীর সঙ্গে বিশ্বাস গড়ে চলেছে।

‘গ্রাহকদের বিশ্বমানের সেরা পণ্যটি সাশ্রয়ী দামে উপহার দিয়ে যেতে চাই অতীতের মতো। ২০২০ সালের মধ্যে দেশের বিস্কুট ও বেকারি খাতের সেরা প্রতিষ্ঠান হতে চাই আমরা। কনফেকশনারি, স্ন্যাকস, সাবান ও অন্য পণ্যগুলোকে অনন্য করে তোলার চেষ্টা করছি। এজন্য সবার আগে প্রাধান্য দিয়েছি গ্রাহক চাহিদাকে। একই সঙ্গে উন্নয়ন ঘটিয়ে চলেছি আমাদের কর্মীদের। শুধু আর্থিক উন্নতি কিংবা মুনাফা অর্জনই নয়, সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজেদের জড়িয়ে রেখেছি। এভাবে দেশের জন্য ভূমিকা রাখতে চাই’
আদম তমিজি হক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক

রতন কুমার দাস

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০