এ দেশ কারও বাবার নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক:বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ দেশটা কারও বাবার নয়, এটা আপনার-আমার সবার দেশ। সবাই মুক্তিযুদ্ধ করে এ দেশটাকে আমরা স্বাধীন করেছি। কিন্তু সেই দেশে কোনো কথা বলার অধিকার নেই। নিরাপত্তা নেই।

গতকাল মঙ্গলবার বিকালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির পদযাত্রার আগে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। 

বিদ্যুতের নজিরবিহীন লোডশেডিং, বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি পদযাত্রা করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলা দিয়ে এই সরকার আমাদের বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জেলে আটকে রেখেছিল। এখন ঘরে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে বিদেশে নির্বাসিত করে রেখেছে সরকার। আমাদের এমন নেতা নেই, যার বিরুদ্ধে একের অধিক মামলা নেই।

এ সরকারের একটাই মাত্র কাজ ‘জনগণের পকেট কাটা’ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, গ্রামের বাজারে দেখেন না, পকেট কাটা বলে, পকেট কাটা ধর ধর। এখন সময় আসছে আসল পকেট কাটাকে ধরার। এমন একটা জিনিস নেই যেখান থেকে সরকার পকেট কাটে না। মোবাইল থেকে তারা পকেট কেটে নেয়। বিদ্যুতের কার্ডে টাকা দিলে দেখবেন ৩০০ টাকা নেই। কেটে নিয়ে গেছে শেখ হাসিনা। এক বছরে আমাদের ৭৮ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়।

‘সরকার এখন বলে, কয়লা নেই, গ্যাস নেই। কেন ভাই? টাকা তো আগে নিয়ে নিয়েছ। টাকা কই গেল? সব পাচার করেছ!’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভিসানীতির কারণে সরকার বেকায়দায় পড়ে গেছে। তাই তারা পাচার করা টাকা নিয়ে আসছে। আবার সেই টাকায় আড়াই পার্সেন্ট ইনসেনটিভ দিতে হচ্ছে। এখন টাকা পাচারকারীদের পুরস্কার দেয়া শুরু হয়েছে। এখন চুরি করেও পুরস্কার পাওয়া যায়। ‘সরকারের গলাবাজি শেষ হয় না। মিডিয়ার ওপর খড়্গ বসে আছে। সাংবাদিকরা মন খুলে কিছু বলতে পারেন না।’

এদেশটা কারও বাবার নয়, এটা আপনার-আমার সবার দেশ বলে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, সবাই মুক্তিযুদ্ধ করে এ দেশটাকে আমরা স্বাধীন করেছি। কিন্তু সেই দেশে কোনো কথা বলার অধিকার নেই। নিরাপত্তা নেই।

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনার কি চেয়েছিলেন বরিশালের মেয়রপ্রার্থী মারা যাক? ধিক্কার জানাই তার এমন কথায়।

তিনি বলেন, সিরাজুল আলম খান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। কিন্তু এই আওয়ামী লীগ তাকে মৃত্যুর পর সম্মান পর্যন্ত দিল না। একটি শোকবার্তাও দেয়নি এ সরকার। কারণ তিনি তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। তাদের তৈরি রক্ষীবাহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। সে সময় এই রক্ষীবাহিনী ৪০ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছিল।

‘এই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিচার বিভাগকে হাতে নিয়ে সব কূটকৌশল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করল। কারণ তারা বুঝতে পারল নির্বাচনে গেলে জনগণ তাদের ভোট দেবে না। কারণ তারা ভালো কিছু করেনি। এই ভয়ে তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় পায়।’

ওবায়দুল কাদের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, আসুন না, রাস্তায় পুলিশ, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ছাড়া। দেখবেন কার কত সাহস। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন, দেখবেন কার কত সাহস আর শক্তিÑজনগণ আপনাদের কী করে। 

সরকারকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মহাসচিব বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন; না হলে পালানোর পথটুকুও পাবেন না। এখন তো আবার আমেরিকা আপনাদের পালানোর পথ বন্ধ করে দিয়েছে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জারিফ তুহিন, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক প্রমুখ।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০