আতাউর রহমান: দেশের পুঁজিবাজারে মার্কেট মেকার (বাজার সৃষ্টিকারী) হিসেবে লাইসেন্স পেতে যাচ্ছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই-সিএসই) ব্রোকারেজ হাউস বা ট্রেকহোল্ডার গ্রিন ডেল্টা সিকিউরিটিজ লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটিকে মার্কেট মেকার লাইসেন্স প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এরই পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের শেষের দিকে বা আগামী বছরের শুরুতে মার্কেট মেকার হিসেবে কাজ শুরু করার বিষয়ে জানিয়েছে ব্রোকারেজ হাউসটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ওয়াফি শফিক মিনহাজ খান।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিএসইসির কমিশন সভায় প্রতিষ্ঠানটিকে লাইসেন্স দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, মার্কেট মেকারের জন্য আবেদন জানায় গ্রিন ডেল্টা সিকিউরিটিজ। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সার্বিক দিক বিবেচনা করে ‘সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বাজার সৃষ্টিকারী) বিধিমালা, ২০১৭’-এর অধীনে প্রতিষ্ঠানটিকে মার্কেট মেকারের নিবন্ধন সনদ প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি। এ বিষয়ে নিবন্ধন বিভাগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম শেয়ার বিজকে বলেন, ‘গ্রিন ডেল্টা সিকিউরিটিজ লিমিটেডকে মার্কেট মেকার নিবন্ধন সনদ প্রদানের বিষয়টির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এখনও প্রতিষ্ঠানটিকে লাইসেন্স দেয়া হয়নি।’
এ বিষয়ে ওয়াফি শফিক মিনহাজ খান শেয়ার বিজকে বলেন, ‘মার্কেট মেকারের লাইসেন্স এখনও ফরমালি হাতে পাইনি। কিন্তু বিএসইসি থেকে একটি কনফারমেশন চিঠি এসেছে। এ বিষয়ে আমাদের টিমের প্রস্তুতি শেষ। তারা এ বিষয়ে বেশ কিছুদিন কাজ করেছে। এখন এ বছরের শেষের দিকে বা আগামী বছরের শুরুতে মার্কেট মেকার হিসেবে কাজ শুরু করব।’
তিনি আরও বলেন, এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডের (ইটিএফ) সঙ্গে মার্কেট মেকারের কার্যক্রম চালু করার ইচ্ছা রয়েছে। তবে সেটা যদি আরও দেরি হয়, তবে তার আগেই মার্কেট মেকার হিসেবে কাজ শুরু করে দেব। আমরা এখন ইটিএফকে টার্গেট করে কাজ করছি। যেহেতু ইটিএফ মার্কেটে নতুন একটি ফ্লেভার নিয়ে আসবে, সেহেতু সেটার সঙ্গে কাজ করা যথোপযুক্ত বলে মনে করি। এ বছরের শেষের দিকে অথবা আগামী বছরের প্রথম দিকে মার্কেট মেকারের কার্যক্রম শুরু হতে পারে।’
বাজার সৃষ্টিকারী বিধিমালায় উল্লেখ রয়েছে, কোনো মার্চেন্ট ব্যাংক, তফসিলি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান, স্টক ডিলার বা স্টক ব্রোকার বিএসইসি থেকে এ সনদ পাওয়ার যোগ্য হবে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বাজার সৃষ্টিকারী) বিধিমালা, ২০১৭ অনুযায়ী, মার্কেট মেকার হওয়ার জন্য স্টক এক্সচেঞ্জের অনুমোদন সাপেক্ষে বিএসইসির কাছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান আবেদন করবে। একইসঙ্গে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পরিশোধিত মূলধন কমপক্ষে ১০ কোটি টাকা থাকতে হবে। আর উল্লিখিত পরিমাণ টাকা পরিশোধিত মূলধন হিসেবে থাকলে যে কোনো মার্কেট মেকার একটি অনুমোদিত সিকিউরিটিজ পরিচালনার জন্য নিয়োজিত থাকতে পারবে। নিবন্ধন পাওয়া বাজার সৃষ্টিকারীরা সর্বোচ্চ সততা, বিশ্বস্ততা, দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে বাজার কার্যক্রম পরিচালনা করবে। প্রত্যেকে এক বছরের জন্য সনদ পাবে এবং তাদের সব হিসাব ১০ বছরের জন্য সংরক্ষণ করতে হবে। অনুমোদিত বাজার সৃষ্টিকারী সিকিউরিটির বা শেয়ারের তারল্য ও উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে এবং বাজারের আচরণের ওপর তাদের ভূমিকা নির্ধারণ করবে।