নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘এ বছর সীমান্ত হত্যা অনেক বেড়ে গেছে। এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা’ বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। গতকাল নিজ দপ্তরে ‘সীমান্ত হত্যা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি ভারতের কাছে তুলছেন কি না’Ñসাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সীমান্তে হত্যা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি ভারতের কাছে তুলে ধরার ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমরা অত্যন্ত সজাগ আছি। যখনই দুর্ঘটনা ঘটে, তখনই ভারতীয় হাইকমিশনারকে ডেকে এনে বলি, এগুলো কেন হচ্ছে? ভারত সরকার সবসময় আমাদের প্রতিশ্রæতি দিয়ে আসছে, সীমান্তে একজনেরও প্রাণহানি ঘটবে না। তবু ঘটছে। আমাদের মধ্যে চুক্তি আছে, সীমান্তে যাতে কোনো ধরনের প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করা না হয়। তারপরও হচ্ছে। এ নিয়ে তাদের নানা রকম ব্যাখ্যা আছে। ভারতীয়রা বলে থাকে, আমাদের লোকজন তাদের সীমানার অনেক ভেতরে চলে যান। তারা সীমান্তে কোনো লোক হত্যা করে না।’
আব্দুল মোমেন আরও বলেন, ‘সেদিন ভারতীয় হাইকমিশনারকে ডেকে এনে বলেছি, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অত্যন্ত উন্নত। এর মধ্যে এগুলো হবে কেন? এগুলো খুবই লজ্জাজনক। আমরা চাই, সীমান্তে যাতে একজনও প্রাণ না হারান। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বৈঠকে সীমান্ত হত্যার বিষয়টি তুলে ধরেছে বাংলাদেশ। আমরা বাহবা নিয়ে বলতে চাই না, ভারতের হাইকমিশনারকে ডেকে এনেছি। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। আমরা চাই, একজন বাংলাদেশি যেন প্রাণ না হারান।’
উল্লেখ্য, গত ২৩ জানুয়ারি নওগাঁর পোরশার হাঁপানিয়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে তিন বাংলাদেশি গরু ব্যবসায়ী নিহত হন। এর আগের দিন ২২ জানুয়ারি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা সীমান্তে দুই বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। গত ৮ জানুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ওয়াহেদপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন দুই বাংলাদেশি যুবক। আহত হন আরও দুজন। মূলত ভারত থেকে গরু আনতে গিয়ে বিএসএফের বন্দুকের মুখে পড়েন তারা।
এদিকে গত ২ জানুয়ারি বিজিবি সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম বলেন, ‘২০১৯ সালে সীমান্তে ৩৫ বাংলাদেশি হত্যার শিকার হয়েছেন।’
পরিসংখ্যান অনুসারে, গত চার বছরের মধ্যে ২০১৯ সালেই সবচেয়ে বেশি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এর আগের ২০১৬ সালে ২৫, ২০১৭ সালে ১৭ ও ২০১৮ সালে তিনজন বাংলাদেশি বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন।