Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 11:54 am

এ সময়ে শিশুর জ্বর

ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। কভিডও নির্মূল হয়নি। তাই এ সময় জ্বর হলে দুশ্চিন্তার কারণ আছে বৈকি। এ দুটি রোগ ছাড়াও শিশুদের জ্বরের অন্যান্য কারণ থাকতে পারে।

নিউমোনিয়ায় জ্বরের সঙ্গে থাকে শ্বাসকষ্ট ও কাশি। রোগটি মারাত্মক হলে শিশুর শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়। গলার ভেতর দুই পাশে অবস্থিত টনসিল সংক্রমিত হলে জ্বরের পাশাপাশি গলাব্যথা, মুখ দিয়ে লালা ঝরা এবং ঢোঁক গিলতে অসুবিধা হয়ে থাকে। জ্বরের সঙ্গে কানে প্রচণ্ড ব্যথার জন্য শিশু অবিরাম কাঁদতে থাকে। একসময় কানের পর্দা ফেটে পুঁজ ও রক্ত আসা শুরু হলে ব্যথা কমতে থাকে। জ্বরও কমে যায়। কোনো কারণে প্রস্রাবের প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হলে, যেমন প্রস্রাব অনেকক্ষণ চেপে রাখলে বা কোষ্ঠকাঠিন্য হলে এই সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে যায়। এতে কখনও কখনও জ্বর তীব্র হয় এবং প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হয়। শিশুদের মস্তিষ্ক ও এর পর্দায় ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে এই রোগ দুটি হয়। এতে জ্বরের পাশাপাশি বমি ও খিঁচুনি হয়। কখনও কখনও শিশু অজ্ঞান হয়ে যায়। ঘাড় শক্ত হয়ে যায়।

লক্ষ রাখুন: শিশুর ঠিকমতো প্রস্রাব হচ্ছে কি না এবং তার পরিমাণ ও রং কেমন। একনাগাড়ে আট ঘণ্টা প্রস্রাব না হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। শরীরে কোনো ফুসকুড়ি উঠেছে কি না; প্রাণচাঞ্চল্য কেমন; ঝিমুনি বা নির্জীব হয়ে আছে কি না; ঢোঁক গিলতে কষ্ট বা মুখ দিয়ে লালা ঝরছে কি না; বুকের ওঠানামা, বুকের নিচের অংশ শ্বাস নেয়ার সময় দেবে যায় কি না; কান দিয়ে রস বা পুঁজ বের হওয়া; খিঁচুনি বা মলের সঙ্গে রক্তপাত হয় কি না; বমি কতবার, পরিমাণ কত; নাক বা দাঁতের গোড়া দিয়ে রক্তপাত অথবা গিরা ফুলে যায় কি না এসব বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে।

কী করবেন: জ্বর ১০০ ডিগ্রির বেশি হলে প্যারাসিটামল সিরাপ বা সাপোজিটরি দিন। যে শিশুরা জ্বর-খিঁচুনিতে ভোগে, তাদের চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী ডায়াজিপাম খাইয়ে দিতে হবে। হালকা গরম পানিতে গামছা বা তোয়ালে ভিজিয়ে মাথাসহ পুরো শরীর ভালোভাবে মুছে দিতে হবে। ঘরের ফ্যান ছেড়ে দিলে তা জ্বর কমাতে সাহায্য করে। খাবারদাবার নিয়ে জোর করা যাবে না, তাতে বমি হতে পারে। প্রোটিন ও ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার একটু বেশি দিতে হবে।

অধ্যাপক ডা. নূরুল গণি

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ