ঐতিহাসিক স্থান আট কবর

চুয়াডাঙ্গার দামুরহুদা উপজেলার সীমান্তবর্তী জগন্নাথপুরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত একটি ঐতিহাসিক স্থান আট কবর। এ আট কবরে আট মুক্তিযোদ্ধাকে সমাহিত করা হয়েছে। তাদের শ্রদ্ধা জানাতে অনেকে এখানে আসেন।
১৯৭১ সালে ৩ আগস্ট কমান্ডার হাফিজুর রহমান জোয়ার্দারের নেতৃত্বে একদল মুক্তিযোদ্ধা চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার জপুর ক্যাম্পে অবস্থান নেয়। ৪ আগস্ট মুক্তিযোদ্ধারা এ ক্যাম্পে কুবাদ খাঁ নামের একজন পাকিস্তানি দালালকে ধরে আনেন। পরদিন সকালে কুবাদের দুজন লোক ক্যাম্পে এসে গুজব ছড়ায় যে, রাজাকাররা গ্রামের সব পাকা ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এ খবরে কমান্ডারের নেতৃত্বে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ছুটে যান জপুর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরের বাগোয়ান গ্রামে। ফলে মুক্তিযোদ্ধারা দুই দলে বিভক্ত হয়ে যান। ঠিক এ সময়ে পাকিস্তানি সৈন্যরা জপুর ক্যাম্পে হানা দেয়। আটকে ফেলে সেখানে থাকা কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাকে। শুরু হয় পাকিস্তানি সৈন্যদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধ। মুক্তিযোদ্ধাদের জনবল কম থাকায় এ যুদ্ধে শহীদ হন আট মুক্তিযোদ্ধা। পরে স্থানীয় জগন্নাথপুর গ্রামবাসী গর্ত করে তাদের গণকবর দেয়। পরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধের এ সমাধিসৌধটি স্থানীয়দের কাছে ‘জগন্নাথপুরের আট কবর’ হিসেবে পরিচিত লাভ করে।
কবরের পাশে আট শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নাম খোদাই করে লেখা হয়েছে। তারা হলেন
হাসান জামান- গোকুলখালী, চুয়াডাঙ্গা
খালেদ সাইফুদ্দিন তারেক- পোড়াদহ, কুষ্টিয়া
রওশন আলম- আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা
আলাউল ইসলাম খোকন- চুয়াডাঙ্গা
আবুল কাশেম- চুয়াডাঙ্গা শহর
রবিউল ইসলাম- মোমিনপুর, চুয়াডাঙ্গা
কিয়ামুদ্দিন- আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা
আফাজ উদ্দিন চন্দ্রবাস- দামুড়হুদা।
চুয়াডাঙ্গা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে এ আট কবর। ৬৬ শতাংশ জমির ওপর ১৯৯৮ সালে এ আট কবর কমপ্লেক্স নির্মিত হয়। সমাধি ছাড়াও এখানে রয়েছে উম্মুক্ত মঞ্চ ও একটি দোতলা ভবন। এ ভবনের দেয়ালজুড়ে রয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ধারাবাহিক ইতিহাসের ২০০ আলোকচিত্র। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণায় আগ্রহীরা এখানে আসতে পারেন। এখানে একটি গ্রন্থাগারও রয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০