Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 11:44 pm

ওআইসি সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরব বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর সংগঠন ‘অরগানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি)’ সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরব হয়েছে বাংলাদেশ। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার বিষয়টি সম্মেলনে তুলে ধরা হয়। এতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের অবস্থা জানিয়ে ‘সিচুয়েশন অব দ্য রোহিঙ্গা মুসলিম কমিউনিটি ইন মিয়ানমার’ শীর্ষক রেজুলেশন উত্থাপন করা হয়।

বিষয়টি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। ওআইসি দেশগুলোর কাউন্সিল অব ফরেন মিনিস্টারের (সিএফএম) ৪৮তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় পাকিস্তানের ইসলামাবাদে। ২২ ও ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত হওয়ায় এবারে সম্মেলনটি ওআইসি ইসলামাবাদ সম্মেলন নামে পরিচিত।

যদিও মন্ত্রী পদমর্যাদার প্রতিনিধিদের নিয়ে এ সম্মেলন, কিন্তু বাংলাদেশ থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা মন্ত্রী পর্যায়ের কেউ অংশ নেননি। সদস্য হওয়ায় এতে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব ড. মাসুদ বিন মোমেন। প্রতিনিধিদলে সৌদি আরব ও পাকিস্তানে থাকা বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতসহ পাঁচজন অংশ নেন।

গতকাল দেয়া বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি ইস্যু করে। এতে উল্লেখ করা হয়, এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘একতা, ন্যায় ও উন্নয়নের জন্য অংশীদারিত্ব’। সম্মেলনে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং নিরাপত্তা বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।

পররাষ্ট্র সচিব তার বক্তব্যে ওআইসির সঙ্গে বাংলাদেশের অব্যাহত সম্পৃক্ততার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন, যা সবসময় শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের নীতি দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। ফিলিস্তিনের জন্য শান্তি প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা, ইসলামফোবিয়া, মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা-অপরাধ, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন, মৌলবাদ ও সহিংস চরমপন্থা বন্ধে বাংলাদেশের দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

এ সময় তিনি রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর অব্যাহত চাপ রাখতে বিশ্বসম্প্রদায়ের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা চালানোর জন্য ওআইসি কর্তৃক তৈরি তহবিলে স্বেচ্ছায় অবদানের জন্য সদস্য দেশগুলোকেও আহ্বান জানান।

এদিকে ওআইসির সম্মেলনে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি আনতে চীন ও ইসলামিক দেশগুলোকে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা রাখতে অনুরোধ জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এবারের সম্মেলনে ৫৭টি দেশের ছয় শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নেন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সেখানে বিশেষ অতিথি হিসেবে রয়েছেন।

ইমরান খান বলেন, ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এই আলোচনায় আমি আপনাদের বিনয়ের সঙ্গে বলছি, আমাদের চিন্তা করা উচিত, কীভাবে আমরা মধ্যস্থতা করতে পারি, কীভাবে আমরা একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে পারি। কীভাবে সেটা সম্ভব আমি তা নিয়ে আলোচনা করতে চাই, হয়তো ওআইসি এবং সঙ্গে চীনÑআমরা সবাই চেষ্টা করে দেখতে পারি, যে যুদ্ধ চলছে সেটা কীভাবে থামানো যায়। এটা যেভাবে চলছে যদি সেভাবেই চলতে থাকে, তবে বাকি বিশ্বের জন্যও তা মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনবে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর এ মন্তব্যের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে একই ধরনের কথা বলা হয়। চীনের বিবৃতিতে বলা হয়, রাশিয়ার ওপর ‘যেভাবে একতরফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তার প্রভাব ছড়িয়ে পড়া’ নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন।