ওজন কমুক, মেটাবলিজম বাড়ুক

আধুনিক যুগে সবাই বিশেষ করে মেয়েরা চায় মেদ কমিয়ে ওজনটা নিয়ন্ত্রণে থাকুক, মেটাবলিজম বাড়ুক। কিন্তু কী এই মেটাবলিজম? ওজনের সঙ্গে এর সম্পর্কটাই বা কী? স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ জেনে নিতে পারেন মেটাবলিজমের বিভিন্ন দিক।
আমাদের দেহের বিভিন্ন কলকব্জা সচল রাখার জন্য প্রতিদিন যে প্রক্রিয়ায় শক্তি তৈরি ও ব্যয় হয়, সেটাই হলো মেটাবলিজম। দেখা যায়, অনভিজ্ঞ ব্যক্তিরা ওজন কমানোর জন্য খাওয়া কমিয়ে দেয়। এমনকি ভিটামিনযুক্ত খাবার তারা এড়িয়ে চলে। এতে শরীর টিকিয়ে রাখতে যে পরিমাণ ক্যালরির প্রয়োজন, তা পরিপূর্ণ না হওয়ায় তারা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মেটাবলিজমেরও ক্ষতি হয়ে যায়।
মেটাবলিজমের কারণে দেহের গঠন ঠিক থাকে, পুনরুৎপাদনে সক্ষমতা আসে এবং পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেওয়া যায়। স্বাস্থ্যকর মেটাবলিজম মূলত পুষ্টির ওপর নির্ভর করে। এটি খাদ্যকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে। প্রোটিন, লিপিড, নিউক্লিইক অ্যাসিড ও কিছু শর্করাজাতীয় খাদ্যকে দেহ গঠনের ব্লকে পরিবর্তিত করে। দেহ থেকে নাইট্রোজেন উপাদানকে বর্জ্য হিসেবে অপসারিত করে।
বোঝা যাচ্ছে, খাবার এড়িয়ে ওজন কমানোটা মোটেও ঠিক নয়। খাবার এড়িয়ে চললে, অর্থাৎ খাবার না খেয়ে থাকলে মেটাবলিজম অনেকটা বেড়ে যায়। তাই ওজন কমানোর জন্য ব্যায়াম, কিংবা কিছু নিয়ম মেনে খাবার গ্রহণ করে ওজন কমিয়ে ফেলা সম্ভব। এতে মেটাবলিজমও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তাছাড়া ব্যায়ামের ফলে পেশি শক্তিশালী হয়। পেশির ক্ষয় আটকায়। পেশির পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে, যা মেটাবলিজম বাড়ায় স্থায়ীভাবে।

দুগ্ধজাতীয় নোনা খাদ্য: গবেষকদের মতে, যারা হালকা নুনযুক্ত দুগ্ধজাতীয় খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করেছে তাদের ক্যালসিয়াম ইনটেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এক্ষেত্রে তারা মল নিষ্কাশনের মাধ্যমে শরীর থেকে বেশি ফ্যাট দূর করতে পারে, যেগুলো আমাদের শরীর থেকে বের হতে চায় না। ফলে মেদ বাড়ার আশঙ্কা থাকে না এবং মেটাবলিজমের জন্য তা খুবই উপকারী।

রসুন: সাম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, রসুন রক্তের সুগার ও ফ্যাট নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই যেসব খাবারে ফ্যাট ও শর্করার পরিমাণ বেশি, সেসব খাবারে রসুন যোগ করে খেতে পারেন।

ডাল: প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ডাল রাখতে হবে। ডাল আমাদের শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল দূর করে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিদিন এক কাপ ডাল আয়রনের চাহিদা এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত পূরণ করতে সক্ষম।

টক দই: আমাদের অন্ত্রে যে ভালো ব্যাকটেরিয়া রয়েছে, সেগুলোকে টকদই সাহায্য করে খাদ্য হজম করতে। এটি শুধু প্রোটিন ও ক্যালসিয়ামের ভালো উৎসই নয়, বরং এটি মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে।

পানি: ওজন কমানোর সহজ পথ হচ্ছে পর্যাপ্ত পানি পান করা। প্রতিবার দুই গ্লাস করে পানি পান করলে মেটাবলিজম রেট ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি হয়। প্রতিদিন যদি দুই লিটার পানি পান করা যায়, তবে ২০০০০ ক্যালোরি বার্ন হতে থাকবে।

ব্রোকলি: ব্রোকলিতে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন সি রয়েছে, যা মেটাবলিজম বুস্ট করতে সাহায্য করবে।

সামুদ্রিক মাছ: ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত সামুদ্রিক মাছ মেটাবলিজমকে বাড়াতে সাহায্য করে। সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ফ্যাটি অ্যাসিড যকৃৎ অ্যারথাইরয়েড সেলকে সিগন্যাল দেয়, যেন অতিরিক্ত ফ্যাট বার্ন করে।

সাবধানতা: সাধারণত মানসিক চাপ ও অবসাদ, বয়স বেড়ে যাওয়া, দিনের বেলা অতিরিক্ত ঘুমানো প্রভৃতি কারণে মেটাবলিজম কমে যায়, মেদ জমে ওজন বেড়ে যায়। এজন্য উপযুক্ত চিকিৎসার পাশাপাশি সঠিক ব্যায়ামের অভ্যাস করতে হবে। খাদ্যাভ্যাস নিয়মের মধ্যে রাখতে হবে।

কামরুন নাহার ঊষা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০