Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 5:24 pm

ওজন কেন বাড়ে কমে

ওজন ওঠানামা স্বাভাবিক। প্রাপ্তবয়স্কদের গড় ওজন এক দিন বা কয়েক দিনের মধ্যে ১ থেকে ২ কিলোগ্রাম (২.২-৪.৪ পাউন্ড) কম বা বেশি হতে পারে। প্রতিদিনের খাবারে ক্যালরির ৫৫-৬০ শতাংশ শর্করা থাকা উচিত। ওজন কমাতে চাইলে দৈনন্দিন শর্করার অংশ (ভাত, রুটি, পাস্তা, আলু, চিনি প্রভৃতি) ৩৫-৪০ শতাংশ হলে ভালো। শর্করা শরীরে গ্লাইকোজেন হিসেবে কিছু পানি ধরে রাখে, যা ওজন বাড়াতে পারে।

ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা হলে তা দূর করার পর শরীরের টিস্যুগুলো পানি টানতে থাকবে। তাই পানিশূন্যতা এড়ানো উচিত। দিনে ২-৩ লিটার পানি খাওয়া উচিত। নিয়মিত ব্যায়াম করলে আরও বেশি পানি খেতে হবে।

উচ্চ সোডিয়ামযুক্ত খাবার লবণ শরীরে পানি ধরে রাখে। প্রচুর পরিমাণে সোডিয়ামযুক্ত খাবার খেলে তৃষ্ণা বাড়বে। ফলে আরও পানি খেতে হয়। এতেও ওজন বাড়ে। প্রতিদিন ৬ গ্রামের বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়।

হরমোনের ওঠানামা নারীদের মাসিক চক্রের সময় ইস্ট্রোজেনের ওঠানামার কারণে শরীরে সামান্য পানি আসে বলে এ সময়ে ওজন কিছুটা বেড়ে যায়। পুরুষদের মধ্যে টেস্টোস্টেরনের ওঠানামার জন্য ওজনে সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। এই ওঠানামা সামগ্রিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে না। ব্যায়াম করার পরই ওজন সামান্য বেশি দেখায়, পেশির ওজন চর্বির নয়। তাই ব্যায়াম করার পরই ওজন মাপা উচিত নয়। ক্যাফেইন বড়ি, মূত্রবর্ধক বা জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খাওয়ার ফলে প্রাথমিকভাবে ওজন বাড়তে পারে। তবে ধীরে ধীরে ওষুধগুলো শরীরের সঙ্গে সামঞ্জস্য করে নিলে পরবর্তী সময়ে আর সমস্যা হবে না।

অন্ত্রের সমস্যা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (আইবিএস), হজমের সমস্যা, সিলিয়াক ডিজিজ, ক্রোন্স ডিজিজ প্রভৃতিতে যারা ভুগছেন, তাদের জন্য অন্ত্রের ওপর ভরসা করা কঠিন। আবার এগুলো না থাকলে বদহজম, গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রভৃতি সমস্যা থাকলে প্রতিদিনের ওজনের ওঠানামা খুবই স্বাভাবিক। অত্যধিক অ্যালকোহল খিদে বড়িয়ে দেয়। ১ গ্রাম অ্যালকোহলে ক্যালরির পরিমাণ ৭। যেহেতু অ্যালকোহলের কোনো পুষ্টিগুণ নেই, তাই এই ক্যালরিকে ‘ফাঁকা ক্যালরি’ বলে, যা কেবল ওজন বাড়ায়। প্রতিদিন ৩০ গ্রামের বেশি অ্যালকোহল খেলে অত্যধিক ওজন বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। প্রাত্যহিক বা সাপ্তাহিকভাবে ওজনের ওঠানামা স্বাভাবিক। যদি আপনার ওজন ছয় মাসের মধ্যে ৬ পাউন্ডের বেশি ওঠানামা করে, তাহলে চিকিৎসক বা ডায়েটেশিয়ানের পরামর্শ নিন।

ফারজানা শবনম

ডায়েটেশিয়ান, লেজার মেডিকেল সেন্টার

গুলশান, ঢাকা