শেয়ার বিজ ডেস্ক: প্রেসক্রিপশনবিহীন ওষুধ বা ‘ওভার দ্য কাউন্টার’ (ওটিসি) ড্রাগ অনেক সময় মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। তাই ওটিসি ওষুধ গ্রহণের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমসহ সর্বস্তরের সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিশ্বমানের ওটিসি ড্রাগ নীতিমালা প্রণয়নে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের প্রতি একটি কমিটি গঠনের আহবান জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা।
সম্প্রতি রাজধানীর মহাখালীতে ওষুধ ভবন সম্মেলন কক্ষে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর আয়োজিত ‘বিশ্বব্যাপী ওটিসি ড্রাগ নীতিমালা পরিস্থিতি: বাংলাদেশের করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন।
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য, পরিবার ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা প্রফেসর ডা. সৈয়দ মোদাসসের আলী। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন অধিদফতরের পরিচালক রুহুল আমিন, সহকারী পরিচালক সালাউদ্দিন, গেøাবাল রেগুলেটরি ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড পলিসির (জিএসকে-আমেরিকা, ভারত, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য) ম্যানেজার বেঞ্জামিন এ চ্যাকো, বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির ভিপি আবদুল হাই, বাংলাদেশ ফার্মাসি কাউন্সিলের সদস্য এম মোসাদ্দেক হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের ডিন অধ্যাপক ড. এসএম আবদুর রহমান, চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সিতেশ চন্দ্র বাচার, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ইসমাইল খানসহ আরও অনেকে।
প্রফেসর ডা. সৈয়দ মোদাসসের আলী বলেন, ‘যদিও আমাদের দেশের ওষুধ নীতিমালা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতিমালা থেকেও শক্তিশালী, এরপরও বর্তমানে আমাদের দেশের প্রায় সব ওষুধই ওটিসি ড্রাগে পরিণত হয়েছে। এ অবস্থা থেকে রাতারাতি উত্তরণ সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। এ সমস্যা দূর করতে পারে ওষুধ গ্রাহকদের সঙ্গে চিকিৎসকদের যথাযথ যোগাযোগ। একমাত্র সচেতনতাই ক্রেতাদের সুপারিশকৃত ওষুধ আর ওটিসি ড্রাগের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে সাহায্য করবে। আর এ কাজে ড্রাগ কেমিস্ট অ্যাসোসিয়েশন থেকে শুরু করে নীতিনির্ধারকসহ সব ওষুধ শিল্পের সবার অংশগ্রহণ জরুরি।’
তিনি ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরকে বিশ্বমানের ওটিসি ড্রাগ নীতিমালা প্রণয়নে একটি কমিটি গঠন ও ওটিসি ড্রাগের তালিকা বাড়ানোরও আহŸান জানান।
মেজর জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের দেশে প্রায় ২০ হাজার লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসি চালু আছে। আমরা এসব ফার্মেসি বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছি। এরই মধ্যে ৪০টি ফার্মেসির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আমরা ধীরে ধীরে সফলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এখন আমরা বিশেষ ওটিসি ড্রাগের বিষয়ে গণমাধ্যমে সচেতনতা নজর দিয়েছি ‘ওভার দ্য কাউন্টার’ ড্রাগ বিষয়ে। তৈরি এবং পাশাপাশি গণমাধ্যমে ওটিসি ড্রাগের বিজ্ঞাপন প্রচারের সুযোগ সৃষ্টি করা। এক্ষেত্রে আরও একটি কাজ করা যেতে পারে, তা হলো ওটিসি ড্রাগের বিশেষভাবে মোড়কীকরণ, যেমন নির্দেশনাগুলো বিশেষ রঙে চিহ্নিত করা।
’গ্লোবাল রেগুলেটরি ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড পলিসির (জিএসকে-আমেরিকা, ভারত, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য) ম্যানেজার বেঞ্জামিন এ চ্যাকো বলেন, ‘অন্যান্য ড্রাগ থেকে ওটিসি ড্রাগগুলো একেবারে ভিন্ন। স্বল্পমেয়াদি ওষুধগুলো সম্পর্কে আমাদের যথাযথ মাত্রায় স্বাস্থ্যসেবাবিষয়ক শিক্ষা থাকা প্রয়োজন, তাহলে ক্রেতারা ওটিসি ড্রাগের প্রভাব সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারবে। বাংলাদেশে শক্তিশালী ও সুচিন্তিত নীতিমালা কাঠামো নির্ধারণ করতে বিশ্ববাজারের অন্যান্য ড্রাগ সম্পর্কিত তথ্য আমাদের প্রয়োজন।’