নিজস্ব প্রতিবেদক: অনুমতি ছাড়া সভা করতে গিয়ে ওমানে গ্রেপ্তার হওয়ার পর দূতাবাসের হস্তক্ষেপে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনিসহ ১৭ জন। গতকাল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে তাদের গ্রেপ্তার ও মুক্তির বিষয়টি তুলে ধরেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন। তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার রাত ১০টায় একটি হোটেল থেকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার সকালে পুলিশ হেফাজত থেকে ছাড়া পান সংসদ সদস্য এবং ওমান প্রবাসীরা।
সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব থেকে ওই সভায় অংশ নিতে যাওয়া কয়েকজন প্রবাসীও বৃহস্পতিবার ছাড়া পেয়েছেন বলে জানান মুখপাত্র। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ১৭ জনের মধ্যে ওমানে যারা প্রবাসী বাংলাদেশি আছেন, তারা মুক্তি পেয়েছেন। পরে আপনি যেটা বললেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব থেকে যে কয়জন ছিলেন, তাদেরও আজকে মুক্ত করা হয়। এখন কেউ পুলিশ কাস্টডিতে নেই।’
ব্যক্তিগত সফরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওমানের রাজধানী মাসকাটে পৌঁছান সংসদ সদস্য সনি। ওই রাতেই মাসকাটের রুয়িতে হোটেল হাফা হাউসে তার জন্য সংবর্ধনার আয়োজন করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব থেকে যাওয়া কয়েকজন প্রবাসীও সেই অনুষ্ঠানে যোগ দেন বলে ওমানে বাংলাদেশ দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
সংসদ সদস্য কতক্ষণ পুলিশ হেফাজতে ছিলেনÑএমন প্রশ্নে সেহেলী সাবরীন বলেন, ‘সময়ের ব্যাপারে আমার কাছে সঠিক তথ্য নেই, তবে অনুষ্ঠানটি হয়েছিল রাত ১০টার দিকে যখন তাকে ধরা হয়। পরদিন সকাল বেলা তাদের দূতাবাসের হস্তক্ষেপে মুক্ত করা হয়। তাদের ছাড়ানোর প্রক্রিয়া তুলে ধরে মুখপাত্র বলেন, ‘যে মুহূর্তে আমরা এই ঘটনাটা জানতে পেরেছি, তখন বিষয়টি জানার পরে ওমানস্থ আমাদের বাংলাদেশ দূতাবাস তারা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করে মাননীয় সংসদ সদস্যকে রিলিজ করেন এবং দূতাবাস থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, সর্বমোট ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং সংসদ সদস্যসহ ১৭ জনকেই, যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন, তারা সবাই এখন রিলিজড আছেন।
দূতাবাস থেকে মুচলেকা দেয়া হয়েছে কি নাÑএমন প্রশ্নে মুখপাত্র বলেন, ‘দূতাবাসের ক্ষেত্রে যেটা হয়, সবকিছুরই একটা অফিশিয়াল প্রসিডিউর আছে, সুতরাং দূতাবাস যেহেতু হস্তক্ষেপ করেছে, দূতাবাসের একটা আন্ডারটেকিং বা হস্তক্ষেপের মাধ্যমেই তো তাকে পুলিশ কাস্টডি থেকে মুক্ত করা হয়েছে।’
গ্রেপ্তারের কারণ ব্যাখ্যা করে সেহেলী সাবরীন বলেন, ‘ওমানে অনুমতি ছাড়া এ ধরনের সভা করার ক্ষেত্রে নিষেধ আছে। আমরা যেটা জেনেছি, প্রবাসী বাংলাদেশিরা যারা এই সভাটির আয়োজন করেছিলেন, তাদের ক্ষেত্রে এই অনুমতিটা নেয়া হয়নি। যে কোনো জায়গায় করার জন্য ওমান সরকারের পারমিশন নিতে হয়। তারা পারমিশনটা নেননি। সেখানে সংখ্যাও অনেক বেশি ছিল, একটি হোটেলে করা হয়েছিল। সেজন্য পুলিশি তৎপরতা হয়।’
সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত রফিকুল আনোয়ারের মেয়ে। আওয়ামী লীগের মনোনয়নে একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য হন সনি।