Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 12:36 am

ওমিক্রনে কি সত্যি ভয়ের কিছু নেই

গোটা বিশ্ব এখন ওমিক্রনে পর্যুদস্ত। নতুন ধরনের করোনাভাইরাসটি আগের সব ধরনের তুলনায় অনেকটাই বেশি সংক্রামক। অর্থাৎ একজনের কাছ থেকে অন্যজনের শরীরে খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে এটি। এমনকি দুই ডোজ টিকা নেয়া ব্যক্তিরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। ওমিক্রন শিশু-কিশোর-তরুণদের মধ্যেও ব্যাপকহারে দেখা যাচ্ছে। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা যাদের কম, তাদের শরীরে জলদি হানা দেয় এই ধরন।

দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হয়েছে এই ধরন। দেখা যাচ্ছে, ওমিক্রনে পুরুষের চেয়ে নারীর আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বেশি ছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়। একই সঙ্গে তরুণদের আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বেশি। একসময় বলা হতো তরুণদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বেশি, তারা আক্রান্ত হবে না। ওমিক্রন সেই ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করেছে।

ওমিক্রনে সংক্রমিত ব্যক্তিদের স্বাদ ও গন্ধের অনুভূতির তেমন কোনো বদল নাও হতে পারে। উচ্চ মাত্রার জ্বর নাও থাকতে পারে। শুকনা কাশি ও স্বরভঙ্গ হলে অবশ্যই করোনা পরীক্ষা করাতে হবে।

ওমিক্রনের প্রভাবে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার নেপথ্যে মূলত টিকা না পাওয়া ব্যক্তিই দায়ী, এমন ধারণা একেবারেই ঠিক নয়। টিকা নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে যে কেউ সংক্রমণের শিকার হবেন, অন্যের শরীরে ভাইরাসও ছড়াবেন।

আমাদের দেশে এখনও বহু মানুষ টিকা পাননি। এ অবস্থায় ওমিক্রন যত বেশি ছড়াবে, তাদের বিপদ তত বাড়বে। যিনি নিজের অসচেতনতার কারণে সংক্রমিত হলেন, দেখা গেল তার হয়তো নিজের কিছুই হলো না। কিন্তু তার কারণে আরও পাঁচজন ক্ষতিগ্রস্ত হলেন। এটি চরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়। নতুন করে এও শোনা যাচ্ছে যে টিকার বুস্টার ডোজ নিয়েও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ ওমিক্রনে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই বুস্টার ডোজ নিলেই আপনি নিরাপদ, তা নয়।

দেশে করোনার যে টিকাগুলো দেয়া হচ্ছে, সেগুলোর কোনোটাই ওমিক্রন প্রতিরোধে শতভাগ কার্যকর নয়। যারা আগে দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে টিকার অ্যান্টিবডির মাত্রা ধীরে ধীরে কমে যেতে পারে।

সাধারণ একটি ধারণা হয়েছে যে ওমিক্রন অত বিপজ্জনক নয়। সে কারণে বেশিরভাগ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে ঢিলামি দিয়েছেন। কিন্তু সংক্রমণের ব্যাপকতার কারণে বিপুলসংখ্যক মানুষ যখন আক্রান্ত হবেন, তখন স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপর চাপ পড়বে। যেকোনো ধরনের করোনাভাইরাসকে সবচেয়ে সফলভাবে প্রতিহত করতে পারে মাস্ক। তাই মাস্ক পরুন, ভিড় এড়িয়ে চলুন।

অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান

মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ