শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজার গত সোমবার উত্থানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। এদিন সকালেই ওয়াল স্ট্রিটে চাঙা ভাব দেখা যায়। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ বা ফেডের প্রতি মনোযোগ থাকায় সূচকের উত্থান দেখা যায়। খবর: এপি।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। গত সপ্তাহেও এই সূচক বৃদ্ধির প্রবণতায় ছিল। ডাও জোনস ইন্ডস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ বা ডাও সূচক ২৪৪ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। ডাও শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৩৪ হাজার ৫৮৯ পয়েন্ট হয়। নাসডাক সূচক বাড়ে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ।
ওয়াল স্ট্রিট তাদের সর্বশেষ আয়ের প্রতিবেদনে প্রকাশ করতে যাচ্ছে। এতে সেরা কোম্পানিগুলোর আয়-ব্যয়ের হিসাব উল্লেখ করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক কনগ্লোমারেট থ্রিএমের শেয়ারদর ৫ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। সম্প্রতি ইয়ারপ্লাগের ত্রুটির কারণে ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ৫৫০ কোটি ডলার জরিমানা দিতে সম্মত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তারপরও তাদের শেয়ারদর বৃদ্ধি পেয়েছে।
বোস্টন সায়েন্টিফিকের শেয়ারদর ৬ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি হƒদযন্ত্রের চিকিৎসায় নতুন ডিভাইস (যন্ত্র) নিয়ে গবেষণা করছে, যা বিনিয়োগকারীদের নজর কেড়েছে।
টপ গেইনারের তালিকায় রয়েছে হাওয়াইয়ান ইলেকট্রিক। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর আগে হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের মাউইয়ে অগ্নিকাণ্ডের জন্য হাওয়াইয়ান ইলেকট্রিকের অবহেলাকে দায়ী করা হয়। এতে তাদের শেয়ারদরে পতন ঘটে। গত তিন সপ্তাহে তাদের শেয়ার ৬৫ শতাংশ কমে। পরে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, আগুন লাগার কয়েক ঘণ্টা আগেই তাদের বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অভিযোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তাদের শেয়ারে উলম্ফন দেখা গেছে।
ফেডের প্রধান জেরোম পাওয়েল বলেন, নীতি সুদহার নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সতর্কতার সঙ্গে পদক্ষেপ নিচ্ছে। এর পর থেকে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তি দেখা যায়। চলতি সপ্তাহে অর্থনীতির স্বার্থে ফেড প্রতিবেদন প্রকাশ করবে, নাকি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য নীতি সুদহার বৃদ্ধি করবে, তা-ই বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক এরই মধ্যে প্রধান সুদহার বৃদ্ধি করেছে, যা ২০০১ সালের পর সর্বোচ্চ। মূল্যস্ফীতি কমাতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। শেষ বৈঠকেও নীতি সুদহার বৃদ্ধি করা হয় এবং জানানো হয়, প্রয়োজনে ফেড ফের সুদহার বাড়াবে।
সিএমই’র ফেডওয়াচ টুলের তথ্যমতে, ওয়াল স্ট্রিটের বিনিয়োগকারীদের ধারণা, ফেড সেপ্টেম্বরের বৈঠকে আবার সুদহার বৃদ্ধি করবে। তাদের ধারণা সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কারণ ২০২৩ সাল শেষ হওয়ার আগে আরও একবার সুদহার বৃদ্ধি করা হবে।
পাওয়েল গত শুক্রবার বলেন, অর্থনীতি নিয়ে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে আসছে সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
গতকাল মঙ্গলবার জুলাইয়ের শ্রমবাজার নিয়ে সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ করার কথা। এদিন মাসিক কর্মসংস্থান প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হবে। কর্মসংস্থানের বাজার নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে, কেননা এটি মূল্যস্ফীতির মধ্যেও শক্ত অবস্থানে রয়েছে এবং মন্দার বিরুদ্ধে ভূমিকা রাখছে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার সরকার মূল্যস্ফীতির সবশেষ তথ্য প্রকাশ করবে। বিনিয়োগকারী ও অর্থনীতিবিদরা এতে নজর রাখছেন। ব্যক্তিগত ব্যয় ও খরচ (পিইসি) সূচকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এ ধরনের ব্যয় ফেড কমিয়ে আনতে চায়। তাহলে মূল্যস্ফীতি দুই শতাংশে নামিয়ে আনা যাবে। পিইসি সূচকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুনে ও জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি ছিল যথাক্রমে ৩ ও ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। গত মাসের মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির হার তুলনামূলক কম ছিল, গত বছরের একই সময়ে যা ছিল ৭ শতাংশ।
এশিয়ার পুঁজিবাজারেও এদিন উত্থান দেখা গেছে। চীন বিদেশি নাগরিকদের ওপর থেকে কভিড বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে। এতে পুঁজিবাজার চাঙা হয়েছে।
