Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 7:28 pm

ওয়াল স্ট্রিটে পতন, জুলাইয়ের পর সূচক সর্বনিন্ম

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ওয়াল স্ট্রিটের পুঁজিবাজারগুলোয় টালমাটাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গত জুলাইয়ের পর প্রধান সূচক এসঅ্যান্ডপি ৫০০ কমেছে ১০ শতাংশের বেশি। বিশ্লেষকরা একে বেঞ্চমার্ক সূচকটির ‘সংশোধন’-এর সময় সমাগত বলে মনে করছেন। খবর: এপি।

গত শুক্রবার সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক কমে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বা ১৯ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট। এতে তাদের পয়েন্ট ৪ হাজার ১১৭ দশমিক ৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। এ হিসেবে জুলাইয়ের পর সূচকটির ১০ দশমিক ৩ শতাংশ পতন হল। ওই সময় সর্বোচ্চ পয়েন্ট হয়েছিল ৪ হাজার ৫৮৮ দশমিক ৯৬। আর গত ১২ কার্যদিবসের ১০টিতেই পতন দেখল যুক্তরাষ্ট্রের এই আর্থিক বাজার।

যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে গত তিন মাস ধরে পতন চলছে। বিনিয়োগকারীরা নীতি সুদহার বৃদ্ধি নিয়ে শঙ্কিত বলেই পতনের ধারা অব্যাহত রয়েছে। এর অন্যতম কারণ, দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডের কর্মকর্তারা সর্বোচ্চ নীতি সুদহার ‘দীর্ঘমেয়াদে’ ধরে রাখার কথা বলছেন। একই সঙ্গে ১০ বছর মেয়াদি সরকারি বন্ডের হার ২০০৭ সালের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিনিয়োগকারীরা মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত ও কোম্পানিগুলোর মুনাফার প্রতিবেদন নিয়েও চিন্তিত।

শুক্রবার ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজের পয়েন্ট কমে ৩৬৬ দশমিক ৭১ বা ১ দশমিক ১ শতাংশ; এতে তাদের পয়েন্ট হয় ৩২ হাজার ৪১৭ দশমিক ৫৯। ছোট কোম্পানিগুলোর শেয়ার নিয়ে গঠিত রাসেল সূচক ২০০০ কমে ২০ দশমিক ০৭ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২ শতাংশ। এতে তাদের পয়েন্ট গত চার বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ ১ হাজার ৬৩৬ দশমিক ৯৪-এ অবস্থান করে।

এদিন উত্থান দেখা যায় অপর সূচক নাসডাকে। প্রযুক্তি ও যোগাযোগ খাতের বৃহৎ কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর নাসডাকের পয়েন্ট বৃদ্ধি পায় ৪৭ দশমিক ৪১ বা শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ, যাতে তাদের পয়েন্ট হয় ১২ হাজার ৬৪৩ দশমিক ০১।

আমাজনের শেয়ারদর বাড়ে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। মুনাফার প্রতিবেদন প্রকাশের তাদের শেয়ারে বৃদ্ধি দেখা যায়। এই গ্রীষ্মে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি মুনাফা ও রাজস্ব আয় করেছে খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানটি। ওয়াল স্ট্রিটে অন্যতম বৃহৎ কোম্পানিটির শেয়ারদর এসঅ্যান্ডপি ৫০০-সহ সব সূচকের ওঠা-নামায় ব্যাপক ভূমিকা রাখে।

ওয়াল স্ট্রিটে যেসব বৃহৎ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সূচকের উত্থানে বিশেষ ভূমিকা রাখে তাদের একসঙ্গে বলা হয় ‘ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেন’। এসব কোম্পানির মধ্যে শীর্ষে রয়েছে আমাজন। তাই এদের প্রতি বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা তুলনামূলক

বেশি। কিন্তু পতনের ধারায় রয়েছে ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেনের অন্যতম কোম্পানি অ্যালফাবেট। পতন হচ্ছে মেটা ও টেসলারও।

এই সাত কোম্পানির বাইরে রয়েছে ইনটেল। তবে এই কোম্পানিটিও বাজারের উত্থানে বিশেষ ভূমিকা রাখে। শুক্রবার তাদের শেয়ারদর বাড়ে ৯ দশমিক ৩ শতাংশ। মূলত বিশ্লেষকদের প্রত্যাশার চেয়ে এই গ্রীষ্মে বেশি মুনাফা করায় তাদের শেয়ারদর বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রযুক্তি খাতের এই লাভের দলে শামিল হতে পারেনি স্বাস্থ্যসেবা, জ্বালানি ও আর্থিক সেবা খাতের সূচকগুলো। তাই বিনিয়োগকারীরা বুঝে-শুনে বিনিয়োগ করছেন।

বেশ কয়েকটি বড় কোম্পানি শেষ প্রান্তিকে হতাশাজনক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে এক্সন মবিলের শেয়ারদর কমে ১ দশমিক ৯ শতাংশ। শেভরনের কমে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ।

এক দিন আগে ইউনাইটেড অটো ওয়ার্কারদের (ইউএডব্লিউ) সঙ্গে সমঝোতা হলেও ফোর্ডের শেয়ারদর কমে ১২ দশমিক ২ শতাংশ।

১০ বছর মেয়াদি বন্ডের হার ৪ দশমিক ৮৪ শতাংশে স্থির রয়েছে। গত বসন্তে সাড়ে ৩ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে গত সপ্তাহে এই বন্ডের হার ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়।

এদিন ইউরোপের বেশিরভাগ সূচক কমে। তবে এশিয়ার পুঁজিবাজারে উত্থান দেখা গেছে।