Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 4:13 pm

ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ারে লোকসান ১৯২ টাকা!

সাইমউল্লাহ সবুজ: ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেডের শেয়ারে বড় অঙ্কের লোকসান গুনছেন বিনিয়োগকারীরা। গত সাড়ে তিন মাসে বিনিয়োগকারীদের প্রতি শেয়ারে লোকসান হয়েছে ১৯১ টাকা ৬০ পয়সা। এর আগে গত বছরের শেষের দিকে রাইট শেয়ার ইস্যুর খবর ছড়ায় কোম্পানিটি। এতে কোম্পানিটির শেয়ারদর বছরের সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে আসে।

যদিও কোম্পানিটি এখনও রাইট ইস্যু নিয়ে তার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেনি। রাইট শেয়ার ইস্যু বিলম্বিত হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ারের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে বলে মনে করছেন কোম্পানি সংশ্লিষ্টরা।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্যমতে, কোম্পানিটির শেয়ারদর গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছিল ৭০৯ টাকা ৫০ পয়সা, যা গতকাল বুধবার ৫১৭ টাকা ৯০ পয়সায় নেমে আসে। এতে কোম্পানিটির শেয়ারদর কমে ১৯১ টাকা ৬০ পয়সা বা ২৭ শতাংশ। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ারদর কমার এই প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। 

এর আগে গেল ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে রাইট শেয়ার ইস্যুর খবর ছড়ায় কোম্পানিটি। পরে তিন মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারদর এক লাফে উঠে আসে বছরের সর্বোচ্চ অবস্থানে। কোম্পানিটির শেয়ারদর ২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর ছিল ২৯০ টাকা ৭০ পয়সা, যা ১৮ ফেব্রুয়ারি ৭০৯ টাকা ৫০ পয়সায় উঠে আসে। অর্থাৎ শেয়ারদর বেড়ে যায় ১৪৪ শতাংশ।

কোম্পানিটি গত বছর নভেম্বরে জানায়, রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পর থেকে দর বাড়তে শুরু করে কোম্পানির শেয়ারের।

তথ্য অনুসারে, ওরিয়ন ইনফিউশনের পর্ষদ ২:১ অনুপাতে রাইট শেয়ার ইস্যুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। অর্থাৎ বিদ্যমান দুটি শেয়ারের বিপরীতে একটি রাইট শেয়ার ইস্যু করবে কোম্পানিটি। এক্ষেত্রে ১০ টাকা প্রিমিয়ামসহ প্রতিটি শেয়ারের ইস্যু মূল্য হবে ২০ টাকা। এ বিষয়ে কোম্পানিটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন চাওয়ার বিষয়ও অভিহিত করে।

ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও রাইট ইস্যু করেনি ওরিয়ন ইনফিউশন। এতে গত তিন মাস ধরেই কোম্পানিটি শেয়ারদর পতনমুখী।

জানতে চাইলে ওরিয়ন ইনফিউশন কোম্পানির সচিব মো. হাবিবুর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, শেয়ারের দাম ওঠানামা বিনিয়োগকারীদের চাহিদার ওপর নির্ভর করে থাকে। কোম্পানির শেয়ারদর কমার সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। তবে রাইট শেয়ার ইস্যু বিলম্বিত হওয়া কোম্পানির শেয়ারদর কমায় প্রভাব রাখতে পারে।

কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি ২০২৩-২৪ হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩৯ পয়সা। গত বছর একই সময়ে শেয়ারপ্রতি ৩৮ পয়সা আয় হয়েছিল। আর তিন প্রান্তিক (জুলাই ২৩-মার্চ ২৪) মিলিয়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৪৫ পয়সা আয় হয়েছে। গতবছর একই সময়ে ১ টাকা ৪১ পয়সা আয় হয়েছিল। ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ১৪ টাকা ৯২ পয়সা।

সর্বশেষ ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২৩ হিসাববছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটি। আলোচ্য হিসাববছরে ওরিয়ন ইনফিউশনের ইপিএস ছিল ২ টাকা ৬ পয়সা, আগের হিসাববছরে যা ছিল ২ টাকা ১০ পয়সা। ২০২৩ সালের ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা ৩২ পয়সায়।

এর আগে সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাববছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন। আলোচ্য হিসাববছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ১০ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৩৭ পয়সায়। ২০২২ সালের ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ১৪ টাকা ২২ পয়সায়, আগের হিসাববছর শেষে যা ছিল ১৩ টাকা ১০ পয়সায়।