নিজস্ব প্রতিবেদক:‘থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আপনাদের অভিযোগ না শুনলে আমার কাছে আসুন। আমার দুয়ার সবসময় খোলা। প্রয়োজনে আমি নিজেই আপনাদের সঙ্গে নিয়ে এলাকায় যাব।’ গতকাল দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে ‘কমিউনিটি পুলিশিং ডে, ২০২০’ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশের কিছু দোষ-ত্রুটি থাকলেও সর্বত্রই নিরলস পুলিশ সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা থেকে করোনা মহামারিতে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে সেবা দিয়েছেন। একইসঙ্গে মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনে করণীয় সব ধরনের ব্যবস্থা পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া হচ্ছে।
কমিউনিটি পুলিশের বিষয়ে কমিশনার বলেন, ঢাকা শহরে ৩৫ থেকে ৩৬ হাজার পুলিশ সদস্য দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে, কিন্তু এটাই যথেষ্ট নয়। সুদৃঢ় নিরাপত্তার জন্য দরকার জনগণের সম্পৃক্ততা। এ কারণেই পাঁচ বছর ধরে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা চালু রয়েছে। সেখানে এলাকার জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ জনগণ পুলিশের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে। এর আগে কমিশনার কমিউনিটি পুলিশের কর্মকাণ্ডে অবদানের জন্য মনোনীতদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। গতকাল সারা দেশে কমিউনিটি পুলিশিং ডে, ২০২০ উদ্যাপিত হয়েছে। এবারের দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘মুজিববর্ষের মূলমন্ত্রÑকমিউনিটি পুলিশিং সর্বত্র’।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, করোনার শুরুতে দেশব্যাপী যখন সাধারণ ছুটি ছিল, তখন ঢাকা শহরে দুই মাস প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ছয় হাজার মানুষকে এক বেলা করে রান্না করা খাবার খাওয়ানো হয়েছে। হাজার হাজার প্যাকেটে নিত্যপণ্য দেওয়া হয়েছে। স্বাধীন দেশের নাগরিক আপনি, আপনাদের সেবা করব বলে, আপনাদের অসুবিধায় পাশে দাঁড়াব বলে এই পুলিশের চাকরিতে যোগ দিয়েছি। এখন আপনি যদি আমাকে ভয় পান, ঘৃণা করেন, আপনার অন্তর থেকে আমাকে দূরে সরিয়ে দেন, তাহলে আপনি বিপদে পড়লে কার কাছে যাবেন।
শফিকুল ইসলাম বলেন, পুলিশ যাতে জবাবদিহিমূলক পুলিশ হয়, সেটার জন্য আমাদের যার যেখানে থেকে যতটুকু ভূমিকা রাখা প্রয়োজন, ততটুকু ভূমিকা রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। পুলিশের যারা দুষ্কর্ম করছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এই দেশটা এমনি এমনি স্বাধীন হয়নি। অনেক রক্ত ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত দেশটি কতিপয় দুর্বৃত্তের কাছে ছেড়ে দেব, এমন প্রত্যাশা করা ঠিক নয়। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করলে একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণ করতে পারব। পুলিশের সব ভালো কাজে আমরা আপনাদের পাশে চাই এবং পুলিশের খারাপ কাজে সবার আগে প্রতিবাদী কণ্ঠটা আপনারই হোক এমন প্রত্যাশা করি।
কমিউনিটি পুলিশিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় রমনা বিভাগ থেকে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সদস্য অ্যাডভোকেট নাজমুল হাসান ও মতিঝিল বিভাগ থেকে মো. মারুফ আহমেদ মোনছের এবং কমিউনিটি পুলিশিংয়ে শ্রেষ্ঠ পুলিশ অফিসার হিসেবে রামপুরা থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন্স) ইউসুফ হাসান ও নিউমার্কেট থানার এসআই মো. শাহেব আলীকে পুরস্কৃত করা হয়। এ সময় ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ রমনা ও মতিঝিল বিভাগের কমিউনিটি পুলিশিং নেতৃবৃন্দ এবং গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।