ওয়ারির পুলিশের উপ-কমিশনার ইব্রাহীম বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘অসদাচরণের’ দায়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ইব্রাহীম খানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। বর্তমানে পুরান ঢাকার ওয়ারি বিভাগের দায়িত্বে থাকা এ পুলিশ কর্মকর্তা গত বছর পুলিশের লালবাগ বিভাগের প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন। সে সময় নবাবপুর রোডে স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত শহীদ একেএম সামসুল হক খানের পরিবারের নামে বরাদ্দ করা জমি দখল করে ভবন ভেঙে ফেলা ও মালামাল লুট করা হয়, যা ঠেকাতে ভূমিকা না রাখার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
এদিকে কেলেঙ্কারিতে ওএসডি হওয়া জামালপুরের সেই জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে চাকরিচ্যুত করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে ‘সরকারি কর্মচারী বিধিমালা ২০১৮’-এর ১২(১) ধারা অনুযায়ী ইব্রাহীম খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়। সাময়িকভাবে বরখাস্ত থাকাকালে তিনি পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত থাকবেন বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে কেন এই ব্যবস্থা নেওয়া হলো, তা জানতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার ও উপ-কমিশনার ইব্রাহীম খানকে একাধিকবার ফোন করেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, জানার পরেও শহীদ পরিবারের জমি দখল ঠেকাতে ভূমিকা না রাখার ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গত জুন মাসের শেষ দিকে ওয়ারি বিভাগের দায়িত্ব নেওয়ার আগ পর্যন্ত লালবাগের দায়িত্বে ছিলেন ইব্রাহীম খান।
গত বছর ২৮ সেপ্টেম্বর সেখানকার বংশাল থানা এলাকার নবাবপুর রোডের ওই বাড়ি দখল ও লুটপাটের ঘটনায় ইব্রাহীমের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত করেন পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত উপ মহাপরিদর্শক আমিনুল ইসলাম। তদন্তে উপ-কমিশনার ইব্রাহীমের অসদাচরণের প্রমাণ পাওয়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
‘চাকরি যেতে পারে’ ডিসি কবীরের
এদিকে খাসকামরার কেলেঙ্কারিতে ওএসডি হওয়া জামালপুরের সেই জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে চাকরিচ্যুত করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা প্রক্রিয়া শুরু করেছি, শাস্তি হবে ইনশাআল্লাহ। তবে এ বিষয়ে মন্ত্রিসভায় কোনো আলোচনা হয়নি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, তদন্তে প্রমাণিত না হলে কাউকে শাস্তি দেওয়া কঠিন। সেজন্য জামালপুরের ঘটনায় তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটি বিষয়টা দেখবে। অবজেক্টিভলি দেখবে, নিরপেক্ষভাবে দেখবে। টেকনিক্যালি এটার মধ্যে যদি কোনো ম্যানিপুলেশন থাকে, তারা সেটাও যাচাই করা হবে এক্সপার্ট দিয়ে। সেজন্য এক্সপার্টও সঙ্গে রাখা হয়েছে। যদি দোষী সাব্যস্ত হয়, তবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কী ধরনের শাস্তি হতে পারেÑজানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ডিসিপ্লিন অ্যান্ড আপিল রুল যেটা, সেখানে ডিসমিসাল হতে পারে চাকরি থেকে (চাকরিচ্যুতি), রিমুভাল হতে পারে, অথবা নিচের পদে নামিয়ে দেওয়া হতে পারে। গুরুদণ্ড হতে পারে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গঠিত তদন্ত কমিটি সুপারিশ করলে আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হতে পারে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
সম্প্রতি ফেসবুকে দুটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে একজন পুরুষ ও একজন নারীকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখা যায়।
বলা হচ্ছে, ওই ভিডিও জামালপুরের জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরের অফিসের বিশ্রাম কক্ষ বা খাসকামরার। পুরুষটি জেলা প্রশাসক নিজে এবং অন্যজন তার দফতরের একজন অফিস সহকারী।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০