Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 5:26 am

কউকের সড়ক খোঁড়াখুঁড়ির মহোৎসব দুর্ভোগে নগরবাসী

কাইমুল ইসলাম ছোটন, কক্সবাজার: বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র কক্সবাজার। জেলায় ২৩ লাখ হলেও শহরে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ বাস করছেন। কিন্তু শহরের প্রধান সড়ক যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। দীর্ঘ সাত মাস প্রধান সড়ক সংস্কারের কাজ চললে এখনও সুরাহা দেখেনি জেলাবাসী। বরং কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) সড়ক খোঁড়াখুঁড়ির মহোৎসবে বাড়ছে ভোগান্তি। সামান্য বৃষ্টিতে হয় জলাবদ্ধতা, প্রতিদিন ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ে জনদুর্ভোগ।

শহরের সিটি কলেজ থেকে লালদিঘির পাড়ের তিন কিলোমিটার সড়কে দুর্ভোগের শেষ নেই। বড় গর্তে গাড়ি পড়ে উল্টে যায়। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোটখাট দুর্ঘটনা।

গত রোববার ও সোমবার সরজমিনে দেখা যায়, রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যাচ্ছে না। সাধারণ পথচারীদের হেঁটে চলার পথও রুদ্ধ। বিভিন্ন গাড়ি রাস্তা দখল করে রেখেছে। চারদিকে জলাবদ্ধতা। হাঁটতে গেলে পোশাকে লাগাতে হয় কাঁদা। গাড়ি যেতে চায় না, গেলে গুনতে হয় বাড়তি ভাড়া। দেখলে মনে হয় অনেক বছরের পুরোনো রাস্তা। অন্যদিকে উপসড়কগুলোয় লক্কড়-ঝক্কড়ের কারণে বাড়ছে ভোগান্তি।

ইজিবাইকে কথা হয় ব্যাংকার রাকিব হাসানের (ছন্দ নাম) সঙ্গে। তিনি বলেন, অফিসে যেতে আগে ২০ মিনিট লাগত। এখন প্রায় এক ঘণ্টার পাশাপাশি দিতে হয় বাড়তি ভাড়া। এমন ভোগান্তি থেকে কবে মুক্তি পাব জানি না। কক্সবাজার পৌরসভা ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সমন্বয়হীনতার কারণে এমন দুর্ভোগ বাড়ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

ইজিবাইক (টমটম) চালক মোহাম্মদ নয়ন বলেন, ভাঙা রাস্তার কারণে গাড়ি প্রায়ই বিকল হয়ে পড়ে। বড় গর্তে গাড়ি পড়ে আটকে যায়। ফলে যাত্রী নিয়ে অনেক কষ্ট হয়। এই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালালে কিছু না কিছু ক্ষতি হয়। তাই গাড়ি নিয়ে যেতে চাই না।

কক্সবাজার ব্লাড ডোনার সোসাইটির সহ-কার্যকরি সদস্য বদিউল আলম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থা দেখছি। বর্ষাকালে আরও খারাপ হয়। দ্রুত সংস্কার করা হলে দুর্ভোগ কমবে।

এ বিষয়ে কউক চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আপনি জিজ্ঞেস করে নেন। আমি এসব বিষয় সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছি।

সংগ্রহ করে ওনার সংবাদ সম্মেলন দেখার পর জানা যায, সংস্কারকাজ তিন বছরে হওয়ার কথা থাকলে ও তিনি দেড় বছরে কাজ শেষ করার চেষ্টা করছেন। রাস্তায় হকার, ফলের দোকানদারদের তুলে দেয়ার চেষ্টা করেও কাজ হচ্ছে না।

তিনি বলেন, আমরা দেড় বছর কষ্ট করি এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মদের সুন্দর একটি রাস্তা উপহার দেই।

আমরা কক্সবাজারবাসী সংগঠনের সমন্নয়ক কলিম উল্লাহ কলিম বলেন, রাস্তা উঁচু করার ফলে আশপাশের নিচু বাড়িগুলো ডুবে যাবে। এই কাজ দীর্ঘদিন চললেও শেষ হয় নাই। কখন শেষ হবে তা কেউ জানে না। মনে হচ্ছে সড়কটি জনগণের মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।