কাইমুল ইসলাম ছোটন, কক্সবাজার: দেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ কক্সবাজারের মহেশখালী। এখানে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনার কারণে অনেক মানুষ পঙ্গুত্ববরণ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এরপরও টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের। অপ্রাপ্তবয়স্ক ও অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন গাড়ি এবং মাদকাসক্ত বেপরোয়া চালকের কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। সঙ্গত কারণে যাত্রী ও পথচারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
গত সোমবার মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে টমটম দুর্ঘটনায় এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর আগে ২৬ সেপ্টেম্বর মহেশখালী বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজের চারজন ছাত্রী আহত হয়েছেন। একজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে ২৩ সেপ্টেম্বর আল আমিন মডেল একাডেমির একজন শিক্ষার্থী দুর্ঘটনার শিকার হয়ে পার্শ^বর্তী উপজেলার হাসপাতালে ভর্তি হন। এ ছাড়া ছোট-মাঝারি দুর্ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে।
জানা গেছে, মহেশখালীতে বিভিন্ন পরিবহন সমিতি নিয়ন্ত্রণ করছেন প্রভাবশালীরা। তাদের ছায়ায় বেপরোয়া চলছে যানবাহন। সড়কে চাঁদাবাজির কারণে খরচ ও মজুরি টার্গেট পূরণ করতে দ্রæত যাওয়ার প্রতিযোগিতায় মেতেছেন চালকরা। সড়কে নজরদারি না থাকার কারণে এমন অনিয়ম বন্ধ হচ্ছে না। এসব জেনেও পরিবহন সংগঠনগুলো ব্যবস্থা না নেয়ার সুযোগে বাড়ছে সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত টমটম। বাড়ছে ফিটনেসবিহীন গাড়ির সংখ্যা। বেশিরভাগ চালকের কোনো লাইসেন্স নেই।
গত সোমবার দুর্ঘটনার পর প্রতিবাদে যান চলাচল বন্ধ করে দেন সাধারণ মানুষ। তারা চালকের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চালককে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে জানা গেছে। এমনকি ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে চালকদের অনেকবার ঝগড়া হয়েছে। ইচ্ছামতো তারা ভাড়া বাড়িয়ে দেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে স্থানীয়রা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।
তারা বলেন, বেপরোয়া গাড়ি চলা বন্ধ করতে পারলে সড়কে দুর্ঘটনা কমবে।
মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, প্রতি মাসে গড়ে সড়কে ৬০ জন দুর্ঘটনার শিকার রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হয়। গত মে মাসে ৫৬, জুনে ৫৮, জুলাইয়ে ৪৮, আগস্টে ৬২ ও সেপ্টেম্বরে ৬০ জনের বেশি মাঝারি ও গুরুতর দুর্ঘটনাকবলিত রোগীদের সেবা দেয়া হয়েছে।
মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পপ কর্মকর্তা ডা. মাহফুজুল হক শেয়ার বিজকে জানান, প্রতি মাসে প্রায় ৬০ জন দুর্ঘটনার শিকার রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হয়। এ ছাড়া অনেকে হাসপাতালে না এসে স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছ থেকে চিকিৎসা নেন, যার হিসাব হাসপাতালে থাকে না।
মহেশখালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনারোধে জনসাধারণ ও চালকদের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে কাজ শুরু করা হবে এবং শিগগির বেপরোয়া গাড়ি চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।