কাইমুল ইসলাম ছোটন, কক্সবাজার: পাঁচ লাখের বেশি মানুষের বসবাস কক্সবাজার শহরে। এ পর্যটন নগরে লেগে থাকে গাড়ির দীর্ঘ জট। নির্দিষ্ট সময়ে অনেকে কর্মস্থল যেতে কিংবা সেখান থেকে ফিরতে পারেন না। গাড়িতে বসে থাকতে থাকতে স্থানীয় মানুষের পাশাপাশি পর্যটকরাও বিরক্ত। সড়কের দুরবস্থার জন্য গাড়ি যেতে চায় না। চালক রাজি হলেও গুনতে হয় বাড়তি ভাড়া।
দীর্ঘদিন ধরে শহরের প্রধান সড়ক সংস্কার করছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক)। ব্যস্ততম এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করেন অর্ধলক্ষ মানুষ। বাসস্ট্যান্ড থেকে হলিডে মোড়ের প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়কে দুর্ভোগের শেষ নেই। সড়কের দু’পাশে ড্রেন নির্মাণ চলছে। এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও সম্পন্ন হয়নি সংস্কারকাজ। কবে শেষ হবে জানে না কেউ? এদিকে দুর্ভোগ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। সংস্কারের কচ্ছপ গতি নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই স্থানীয় মানুষের। শহরের উপসড়কগুলোর কাজ করছে পৌরসভা। কাজ এগিয়ে গেলেও তাদের একই অবস্থা। প্রধান ও উপসড়কগুলোর ভোগান্তিতে নাকাল বাসিন্দারা। কবে রাস্তার কাজ শেষ হবে, এই অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন তারা।
বার্মিজ মার্কেটের ব্যবসায়ী মুসা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সড়কের বেহাল দশার কারণে পর্যটকরা আসতে চায় না। পায়ে হাঁটার অবস্থা নেই।
ফলে শীতের মৌসুমেও পর্যাপ্ত ক্রেতা না পেয়ে হতাশায় ভুগছি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রধান সড়কের দুপাশে কাজের কারণে বিভিন্ন অংশ হাঁটার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ঝুঁকি নিয়ে পথচারীদের চলাচল করতে হচ্ছে রাস্তার ওপর দিয়ে। পা পিছলে কেউ ড্রেনের মধ্যে পড়লে মৃত্যুও হতে পারে। যাত্রীদের গুনতে হয় বাড়তি ভাড়া। দীর্ঘক্ষণ আলির জাঁহাল, রুমালিয়া-তারাবনিয়ারছড়া, বার্মিজ মার্কেট ও বাজারঘাটায় যানজট লেগে থাকে।
খানাখন্দে ভরা উপসড়কগুলোয় পৌরসভার নেতৃত্বে নির্মাণকাজ চলছে। কাজের জন্য অনেক উপসড়কে চলাচল সীমিত করা হয়েছে। ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগের শেষ নেই।
টমটম-চালক সাহাব উদ্দীন বলেন, সড়কের গর্তগুলোয় অনেক সময় গাড়ি আটকে বিকল হয়ে পড়ে। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় আহত হন অনেক যাত্রী। তাই এদিকে গাড়ি আসতে চায় না। ভাড়া কেন বাড়তি নেনÑজিজ্ঞেস করলে তিনি
জানান, এদিকে গাড়ি নিয়ে এলে গাড়ির যেকোনো অংশ নষ্ট হয়ে পড়ে। দীর্ঘক্ষণ জ্যামে আটকে থাকতে হয়।
কক্সবাজার সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সাদেক হোসেন বলেন, সড়ক সংস্কারের বিষয়টি সুখবর হলেও ধীরগতির কারণে তা দুর্ভোগের কারণ হয়েছে দাঁড়িয়েছে। সঠিক সময়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না। প্রধান সড়কের সঙ্গে উপসড়কের কাজ দ্রুত করার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের সভাপতি আবু নাছের হেলাল উদ্দিন বলেন, এত দুর্ভোগের প্রধান কারণ হলো কউক ও পৌরসভার মধ্যে সমন্বয়হীনতা। জনকল্যাণমুখী কাজে সাধারণ মানুষের পরামর্শ নিয়ে দায়িত্ব পালন করলে দুর্ভোগ কমবে।
এ বিষয়ে কউক চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সদস্যের (প্রকৌশল) সঙ্গে কথা বলতে বলেন। জানতে চাইলে প্রকৌশলী লে. কর্নেল মো. খিজির খান বলেন, প্রকল্পের সময় ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত রয়েছে। জুনের মধ্যে কাজ করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুর্ভোগ কমাতে সড়কের গর্তগুলো ভরাট করার কাজ চলমান রয়েছে।